শোকাবহ আগস্ট

সানশাইন ডেস্ক : নানা ষড়যন্ত্রে, কূটচালে চেষ্টা চলেছে তাঁকে সরিয়ে দিতে পথ থেকে, আন্দোলন থেকে। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। শেষাবধি তাই একদল ঘৃণ্য পশু, এক কালরাতে রক্তে ভাসায় জাতির জনক ও স্ত্রী, সন্তান, স্বজনদের। রক্তাক্ত করে স্বাধীনতাকে।
কিন্তু রক্তে গড়া বঙ্গবন্ধুর দেহ ঘৃণ্য পশুরা কেড়ে নিতে পারলেও নিতে পারেনি আদর্শ বঙ্গবন্ধুকে। কেননা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যে চিরঞ্জীব। তাই ৪৮ বছর পরও বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞ-শ্রদ্ধা-ভালবাসায় সিক্ত করেন বঙ্গবন্ধুকে। তাঁরই রক্তে ধোঁয়া বাংলায় আবারও জাগে যূথবদ্ধ মানুষ। শ্রদ্ধায়, স্মরণে, পথেপ্রান্তরে আজও ওঠে সেই সম্মিলিত রণধ্বনি- ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে।
হঠাৎ কারোর ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, স্বাধীনতাও আসেনি। বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ফসল আমাদের এই স্বাধীনতা। খোদ পাকিস্তানের জন্মেরও দু’মাস আগে তৎকালীন যুবনেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক সমাবেশে পূর্ব বাংলার (আজকের বাংলাদেশ) স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন।
১৯৪৭ সালের ৩ জুন (পাকিস্তান জন্ম নেয় ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট) এক যুব সমাবেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘এ স্বাধীনতা (পাকিস্তানের স্বাধীনতা) আসল স্বাধীনতা নয়। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতার জন্য আমাদের আবারও লড়াই করতে হবে।’ এমনকি পূর্ব পাকিস্তান নাম মেনে না নিয়ে ১৯৫৫ সালের ১৫ আগস্ট সংসদে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু এ অংশের নাম বাংলায় অর্থাৎ বাংলাদেশ নামকরণের দাবি জানান।
বস্তুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ইতিহাসের বাঁক ঘোরানো এক সিংহপুরুষ। বাঙালি জাতির চরিত্র সম্পর্কে তাঁর চেয়ে বোধকরি আর কেউ জানতেন না। তবুও তিনি জীবনের বিনিময়ে সেই জাতির জন্যই রচনা করেন ইতিহাসের এক অমোঘ অধ্যায়। পৃথিবীতে কোনো জাতিই মাত্র ৯ মাসে স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। আর স্বাধীনতার জন্য এই স্বল্পতম সময়ে প্রায় ত্রিশ লাখ বাঙালির আত্মদানের ঘটনাও ইতিহাসে বিরল।
শোকাহত ও অভিশপ্ত মাস আগস্টের আজ দ্বাদশতম দিন। হাতে গোনা স্বাধীনতাবিরোধী আর তাদের দোসররা ছাড়া শোকে মুহ্যমান গোটা জাতি। রাজধানীর প্রতিটি মোড়ে মোড়ে, পাড়া-মহল্লায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে উড়ছে বিশাল বিশাল কালো পতাকা ও ব্যানার। প্রতিটি ব্যানার-ফেস্টুনেই বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা বিভিন্ন স্লোগান।
পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত এনে ফাঁসির রায় কার্যকর আর বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের নেপথ্যের মাস্টারমাইন্ডদের খুঁজে বের করে নতুন প্রজন্মের সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচনে দ্রুত একটি জাতীয় কমিশন গঠনের দাবিতে অজস্র সংগঠনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে প্রতিটি অলিগলির দেয়াল।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ