বাগমারায় মারপিট করে ছিনতাই, ৩ জন আটক

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: বাগমারায় জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে এক ব্যক্তিকে গাছের সাথে বেঁধে মারপিট করে ছিনতাইয়ের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে বাগমারা থানার পুলিশ। গত মঙ্গলবার ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া মহল্লা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো চাঁনপাড়া মহল্লার ইদ্রিস আলীর দুই পুত্র আব্দুর রাজ্জাক (৩০) ও মিঠুন রাজু(২৭) এবং একই মহল্লার আলেফ আলীর পুত্র সান্টু ইসলাম (২৬)।
মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চাঁনপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাইনুল ইসলাম জমিসংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। প্রচন্ড খরার কারণে গত রবিবার রাত আনুমানিক নয় দশটার দিকে একই মহল্লার হাটৎপাড়া এলাকায় তিনটি পানবরজে পানি সেচ দেওয়ার জন্য যায় মাইনুল।
এ সময় মাইনুলের প্রতিপক্ষরা জনৈক নারীর ঘরে তাকে জোর করে প্রবেশ করিয়ে ও গাছের সাথে বেঁধে ব্যাপক মারপিট করা হয়। পরে প্রতিপক্ষরা পুলিশে খবর দিয়ে মাইনুলকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় এবং ওই নারীকে অর্থের প্রলোভন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মাইনুলের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দিতে বাধ্য করে। পর দিন সোমবার পুলিশ মাইনুলের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা নিয়ে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
এদিকে ওই ঘটনার জের ধরে পরদিন মঙ্গলবার মাইনুলের মা মমেনা খাতুন তার ছেলেকে অন্যায় ভাবে আটকে রাখা, ও গাছের সাথে বেঁধে মারপিটসহ প্রাণনাশের হুমকি ও মোবাইল ফোন এবং আশি হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে বাগমারা থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মাইনুলের মামাত দুই ভাই সহ সাত জনকে আসামী করা হয়। এই মামলায় একই দিন বিকেলে তিনজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে বাগমারা থানার পুলিশ।
মাইনুলের মা অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে অত্যন্ত সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ এবং ত্যাগি আওয়ামীলীগ কর্মী। এ কারণে স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক ডিও লেটার দিয়ে তাকে শহীদ সেকেন্দার মেমোরিয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন।
মাইনুল সুনামের সাথে এই দায়িত্ব পালন করে আসছে। মাইনুলের মা আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার পিতার মৃত্যুর প্রায় পঁচিশ বছর ধরে আমাকে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে ভাই ইদ্রিস ও তার দুই ছেলে। এ নিয়ে মাইনুল প্রতিবাদ করলে তার উপর বিভিন্ন সময়ে নানান ভাবে অত্যাচার নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। গত রোববার আমার ছেলে হটাৎপাড়া এলাকায় তার পানবরজে পানি সেচ দেওয়ার জন্য গেলে প্রতিপক্ষরা ৭-৯ জন ভাড়াটে লোকজন সহ আমার ছেলেকে জোরপূর্বক ধরে ও গাছের সাথে বেঁধে ব্যাপক মারপিট করেছে।
মাইনুলের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, প্রতিপক্ষরা আমার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাতেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রেখেছে। তারা আমার শয়ন ঘর সংলগ্ন স্থানে জোর করে মুরগির খামার স্থাপন করে আমাদের চলাচলের রাস্তায় মুরগির বিষ্টা ফেলে ভয়ানক ভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। তাদেরকে এসব বিষয় নিষেধ করা হলে তারা প্রাণনাশের ও বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেয়।
এদিকে একই ঘটনাকে ইস্যু করে দুই মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, চলমান ঘটনার প্রেক্ষিতে দুটো অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হিসাবে গ্রহন করা হয়েছে। জমি সংক্রান্ত না অন্য কোন ঘটনার জের ধরে এমন ঘটনা তা বিজ্ঞ আদালত দেখবেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ