সর্বশেষ সংবাদ :

বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মূল স্রোতে নামছে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: এশিয়া কাপ শুরু হতে বাকি ঠিক আর এক মাস। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের আসর শেষ হওয়ার আড়াই সপ্তাহের মধ্যে মাঠে গড়াবে বিশ্বকাপ। সব মিলিয়ে তেমন বেশি সময় বাকি নেই। বিশ্ব আসরে দৃষ্টি রেখে আর এশিয়া কাপের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার অভিযান শুরু হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের।
চলতি মাসেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষে সপ্তাহ দুয়েকের বিরতি কাটিয়েছেন ক্রিকেটাররা। মাঝের সময়ে তেমন কিছু ছিল না দেশের ক্রিকেটে। তবে বিভিন্ন বিদেশি লিগে ব্যস্ত সময় কাটছে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাসদের। তাদের ছাড়াই এবার শুরু হচ্ছে জাতীয় দলের ব্যস্ততা।
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার শুরু হবে জাতীয় ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি পর্ব। সবার শারীরিক অবস্থা পরখ করতে শুরুতে হবে ফিটনেস ট্রেনিং। সেখান থেকে কিছু ক্রিকেটার কমিয়ে এশিয়া কাপের জন্য প্রাথমিক দল ঘোষণা করবেন নির্বাচকরা।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান নানা সময়ে বেশ কয়েকবার বলেছেন, এশিয়া কাপের দলটিই অপরিবর্তিত রাখা হতে পারে ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপের জন্য। যদিও বাংলাদেশ দলের যা বাস্তবতা, তাতে এশিয়া কাপ হয়ে উঠতে পারে বিশ্বকাপের দল নির্বাচনী আসর। কয়েকটি জায়গা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ যে আছে এখনও।
এশিয়া কাপের পরপরই ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থাকায় বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য আলাদা সময় মিলবে না বললেই চলে। আপাতত সামনে তাই এশিয়া কাপ হলেও এই অনুশীলন ক্যাম্প দিয়েই মূলত বিশ্বকাপের প্রবাহে নেমে পড়ছে দল। এখান থেকেই সামনের দুই বড় টুর্নামেন্টের জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নিতে হবে ক্রিকেটারদের। বিসিবিতে রোববার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানান, এই ক্যাম্পের জন্য একটি প্রাথমিক দল প্রস্তুত করেছেন তারা।
“আমাদের ফিটনেস ক্যাম্প শুরু হচ্ছে আগামীকাল। বৃহস্পতিবার ইয়ো ইয়ো টেস্ট আছে। আমরা দেখতে চাচ্ছি, ক্রিকেটারদের ফিটনেস এখন কোন পর্যায়ে আছে। তাদের স্ট্যান্ডার্ডটা দেখার জন্য (ইয়ো ইয়ো টেস্ট)ৃ আমরা প্রায় ৩২ জন খেলোয়াড় তৈরি করেছি। ওরা এসে ইয়ো ইয়ো টেস্ট দিয়ে যাবে।” বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটাররা ছাড়াও বাংলা টাইগার্স ও হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিট মিলিয়ে এই প্রাথমিক দল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখান থেকে কিছু ক্রিকেটার কমিয়ে পরে ৮ অগাস্ট শুরু হবে এশিয়া কাপের স্কিল ট্রেনিং।
“অগাস্টের ৫-৬ তারিখে ২১ বা ২২ জনের একটা স্কোয়াড দেওয়া হবে। ওরা এশিয়া কাপের জন্য স্কিল ট্রেনিং করবে। ৩২ জনের দলটি আমরা এখন প্রকাশ করছি না। আমাদের মধ্যেই থাকবে। তবে ২১-২২ জনের যে স্কোয়াড, সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।” এই ফিটনেস ক্যাম্পে থাকছেন না জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে এখন দেশের বাইরে সাকিব, তাওহিদ হৃদয় ও শরিফুল ইসলাম। পুরো টুর্নামেন্ট খেলার ছুটি পাওয়ায় জাতীয় দলের স্কিল ক্যাম্পেও তাদের থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টির কারণে শুরুতে পাওয়া যাবে না লিটন, আফিফ হোসেনকেও। আগামী ৬ অগাস্ট এই টুর্নামেন্ট শেষ করে তারা যোগ দেবেন স্কিল ক্যাম্পে। জিম আফ্রো টি-টেন লিগ শেষ হয়ে গেলেও সরাসরি স্কিল ক্যাম্পেই যোগ দেওয়ার কথা মুশফিক, তাসকিনের। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ব্যস্ত সময় কাটানো ক্রিকেটাররা খেলার মধ্যেই থাকায় তাদের জন্য ফিটনেস ক্যাম্প করা জরুরি নয় বলে মনে করেন মিনহাজুল আবেদীন।
“যারা এখন দেশে আছে, ওরাই আসবে ফিটনেস ক্যাম্পে। যারা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে গেছে, তারা তো খেলার মধ্যেই আছে। সেখান থেকে এসেই ক্যাম্পে যোগ দেবে।” ইংল্যান্ডে ইনজেকশন নিয়ে রোববার রাতে দেশের পথে রওনা হবেন তামিম ইকবাল। আপাতত এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মতো পুরোপুরি বিশ্রামে থাকতে হবে তাকে। ৬-৭ অগাস্ট নাগাদ তিনি শুরু করবেন মাঠে ফেরার প্রক্রিয়া। হালকা ট্রেনিং দিয়ে শুরুর পর ধীরে ধীরে বাড়বে তার অনুশীলনে তীব্রতার মাত্রা।
কোচিং প্যানেলের সবাইকেও ক্যাম্পের শুরু থেকে পাওয়া যাবে না। ফিটনেস ক্যাম্পে থাকছেন ট্রেনার নিক লি। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির ডেপুটি ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীস জানান, অন্যান্য স্কিল কোচরা ধাপে ধাপে ক্যাম্প শুরুর আগেই দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। “আমাদের কোচিং প্যানেলে স্কিল কোচ যারা আছেন, চান্দিকা হাথুরুসিংহেসহ তারা সবাই ৮ তারিখের মধ্যে চলে আসবেন। অর্থাৎ স্কিল ক্যাম্পের শুরু থেকেই তারা থাকবেন। আগে যেহেতু ফিটনেস ক্যাম্প, তাই শুরু থেকেই পাওয়া যাবে ফিটনেস কোচদের।” এশিয়া কাপের এবারের আসর শুরু ৩০ অগাস্ট। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।


প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৩ | সময়: ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ