সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
সানশাইন ডেস্ক: অবশেষে পাকিস্তানের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ। আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত পাকিস্তানের জন্য বুধবার এই ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদ।
বিবিসি জানিয়েছে, ওই তিন বিলিয়ন ডলারের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে পাকিস্তান পাবে ১২০ কোটি ডলার। বাকি অর্থ দেওয়া হবে আগামী নয় মাসের মধ্যে। ডলার সঙ্কটে ধুকতে থাকা পাকিস্তান ঋণ খেলাপি হওয়ার দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল। এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মত ডলারও ছিল না কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভে।
চলতি সপ্তাহেই মিত্র দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছ থেকে তহবিল পেয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টায় এই ঋণ বড় ভূমিকা রাখবে। “এই ঋণ মধ্যমেয়াদী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে, পরবর্তী সরকারের জন্যও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দেবে।”
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এখন সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এর মধ্যে গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক সঙ্কট পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। আইএমএফ পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছিল বেশ আগেই। কিন্তু সেই ঋণের শর্ত হিসেবে সংস্কার কর্মসূচির বাস্তবায়ন নিয়ে গত আট মাস ধরে তুমুল দর কষাকষি চলে।
সৌদি আরবের দেওয়া ২ বিলিয়ন ডলার মঙ্গলবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও তারা এক বিলিয়ন ডলার পেয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ ওই দেশ দুটি গত এপ্রিল মাসেই পাকিস্তানকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আইএমএফের ঋণের বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা অর্থ ছাড় স্থগিত রাখে।
বিবিসি লিখেছে, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই অর্থের পাশাপাশি আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আরও সহায়তা পাওয়ার পথ খুলে দেবে। অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, পাকিস্তানের রিজার্ভ এ মাসের শেষ নাগাদ ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে তারা আশা করছেন।
পাকিস্তানের মাথাব্যথার সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রার ব্যয়। সরকারি হিসাবে সেখানে মূল্যস্ফীতি পৌঁছে প্রায় ৩০ শতাংশে। এবছরই জাতীয় নির্বাচন হবে পাকিস্তানে; আইএমএফ এর শর্ত পূরণের জন্য তার আগেই অনেক ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচন এবং কৃচ্ছ্রতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে শাহবাজ শরিফের জোট সরকারকে।