ফিফটি পেলেও ইনিংসকে পূর্ণতা দিতে পারলেন না তামিম

স্পোর্টস ডেস্ক: রানে ফেরার স্বস্তি পেলেন তামিম ইকবাল। খুব সাবলিল ও স্বচ্ছন্দ ইনিংস না হলেও ফিফটির স্বাদ পেলেন। কিন্তু পারলেন না ইনিংসকে পরিণতি দিতে। ফুরাল না তার সেঞ্চুরির প্রতীক্ষা। গুরুত্বপূর্ণ সময় আউট হয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরলেন আক্ষেপ নিয়ে আর হতাশা বিলিয়ে।
আয়ারল্যান্ড সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে তামিম আউট হন ১৪ ও ৭ রান করে। তার কাছ থেকে একটা বড় ইনিংস প্রাপ্য ছিল অনেক দিন ধরেই। ওয়ানডেতে টানা ৯ ইনিংসে তার ছিল না ফিফটি। অবশেষে সিরিজের শেষ ম্যাচে রোববার পঞ্চাশের দেখা পেলেন তিনি। কিন্তু পারলেন না ইনিংসটিকে শতরানে টেনে নিতে। ৬ চারে ৮২ বলে ৬৯ রানের ইনিংস শেষ হলো ভীষণ দৃষ্টিকটূ এক শটে।
আউট হওয়ার ধরনের মতোই বাজে ছিল আউট হওয়ার সময়টাও। ৪ উইকেট পড়ে গেছে আগেই। ক্রিজে ছিল স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের শেষ জুটি। তামিমের সঙ্গী তখন মুশফিকুর রহিম। দলকে অন্তত ৪০ ওভার পার করিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল দুজনের। কিন্তু ৩৪ ওভারে উইকেট বিলিয়ে ফেরেন তামিম।
অথচ বড় ইনিংস খেলার মঞ্চ তার জন্য ছিল প্রস্তুত। মাত্র ১ রানে জশ লিটলের বলে জীবন পান তিনি। যে ক্যাচটি ফেলে দিলেন অ্যান্ড্রু বালবার্নি, স্লিপে এর চেয়ে সহজ ক্যাচ কমই পাবেন আইরিশ অধিনায়ক। পরের বলেই দেখা পান তিনি প্রথম বাউন্ডারির।
বাংলাদেশের আরেক ওপেনার অভিষিক্ত রনি তালুকদার বিদায় নেন চতুর্থ ওভারে। কিন্তু লিটলের পরের ওভারে দৃষ্টিনন্দন ড্রাইভে বল বাউন্ডারিতে পাঠান তামিম। এক বল পর আরেকটি বাউন্ডারি পান তিনি ব্যাটের কানায় লেগে। মনে হচ্ছিল, দিনটি বুঝি তারই। এরপরই অবশ্য কিছুটা খোলসে ঢুকে যান তিনি।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত তিনে নেমে আগ্রাসী কিছু শটে চাপ কমিয়ে দেন তামিমের ওপর থেকে। এবার অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। আউট হয়ে যান ৩২ বলে ৩৫ করে। দারুণ কিছু শট খেলে লিটন দাসও উইকেট ছুড়ে দেন থিতু হয়ে (৩৯ বলে ৩৫)। তামিম খেলে যাচ্ছিলেন নিজের মতো করেই। ঠাণ্ডার মাথার ব্যাটিংয়ে ফিফটি পূরণ করেন তিনি ৬১ বলে। ওয়ানডেতে যেটি তার ৫৬তম ফিফটি।
এটিতে ১৫তম সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়ার মতো সময় যথেষ্টই ছিল তার হাতে। দলও তার কাছে দাবি করছিল এমন কিছুই। আরেক প্রান্তে তাওহিদ হৃদয় ততক্ষণে ফিরে গেলেও মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তামিমের জুটি জমে উঠছিল। কিন্তু হঠাৎই জর্জ ডকরেলের বলে দায়িত্বজ্ঞানহীন এক শট খেলে বসেন তামিম। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বলের কাছে যেতে পারেননি, তবু চালিয়ে দেন ব্যাট। ওপরের কানায় লেগে উঠে যায় সহজ ক্যাচ। দলকে বিপদে ঠেলে ফেরেন অধিনায়ক।
শেষ হয়ে যায় তার সেঞ্চুরি খরা কাটানোর সম্ভাবনাও। ওয়ানডেতে তার সবশেষ সেঞ্চুরি ২০২১ সালের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর পেরিয়ে গেল ২১ ইনিংস। বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসমান ও সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ানের ব্যাটে কোনো সেঞ্চুরি নেই। অধিনায়কের ব্যাটে বড় ইনিংসের খরা দলের জন্য দুভার্বনা বটে।
এরপর দলকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের। দারুণ এক জুটিও গড়েন দুজন। কিন্তু কাজ শেষ করতে পারেননি কেউই। জুটি থামে ৭২ বলে ৭৫ রানে। ৫৪ বলে ৪৫ করে মুশফিক ফেরেন ৪৬তম ওভারে। পরের ওভারে মিরাজ আউট হয়ে যান ৩৯ বলে ৩৭ রান করে। তিনশর আশেপাশে স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ১৩ রানের মধ্যে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অল আউট হয় ২৭৪ রানে।


প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩ | সময়: ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ