পবার বড়গাছীতে মারামারির ঘটনায় উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছী বাজার নিয়ে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
বুধবার সরোজমিন গিয়ে কথা হয় বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন ‘ প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বড়গাছী বাজার উন্নয়নে গত ১৩ এপ্রিল পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি-এসি ল্যান্ড) অভিজিৎ সরকার বড়গাছি বাজার পরিদর্শনে আসেন। সেখানে প্রায় বাজারের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এসিল্যান্ড চলে গেলে দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম শফি সেখানে উপস্থিত হয়ে এসিল্যান্ড ও বড়গাছী ইউপির চেয়ারম্যান সাগরের মা-মাসি তুলে গালাগালিসহ অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা শুরু করেন। তখন চেয়ারম্যান সাগর তাকে বিরত থাকতে বলেন। তারপরেও তিনি অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে ইউপি সদস্য শফি চেয়ারম্যানকে ধাক্কা দেয়। তারপরেও শফি তার অসংলগ্ন কথাবার্তা থেকে বিরত না হয়ে আবারো চেয়ারম্যানকে ধাক্কা দেয়। এমদাদুল হক চেয়ারম্যানকে রক্ষা করতে গেলে শফি তাকেও ধাক্কা দিলে মাটিতে পড়ে যায়।
এ সময় উপস্থিত লোকজন মারমুখি হতেই সে পালিয়ে যেতে থাকে। দৌড়ানোর এক পর্যায়ে শফি ড্রেনে পড়ে যায়। ড্রেনের রডে তার মাথা ফেটে যায়। এরপর চেয়ারম্যানের কথায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়’। সেখানে পিস্তুল ও চাইনিজ কুড়াল প্রদর্শন করা হয়নি।
এ বিষয় নিয়ে বড়গাছী বাজারে সরোজমিন জানা যায়, রাজন আলী নামের এক প্রত্যেক্ষদর্শী বলেন, মারামারি হয়েছে সত্য। কিন্তু কোন পক্ষের কাছেই পিস্তল বা অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র ছিল না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যেক্ষদর্শী বলেন, বাজার উন্নয়নের জন্য হাট কমিটির সদস্যবৃন্দ ও চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলোচনা করতে থাকেন। এমন সময়ে মেম্বার মাদকাসক্ত শফি এখানে উপস্থিত হয়ে অশ্লিল ভাষা বলতে থাকে। চেয়ারম্যান বারবার নিষেধ করলেও আরো উচ্চস্বরে খারাপ কথা বলতে থাকে। এর এক পর্যায়ে ইউপি’র চেয়ারম্যান সাগরকে ধাক্কা দেয়। এতে চেয়ারম্যান পড়ে গেলে উপস্থিত লোকজন তাকে মারতে গেলে সে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় শফি গর্তে পড়ে যায়। সেখানে ইট-পাথরের সাথে লেগে তার মাথা ফেটে যায়। পিস্তল ও চাইনিজ কুড়ালের কথা কেহ বললে- মিথ্যা বলছে।
তিনি আরো বলেন, মেম্বার শফিকুল ইসলাম শফি রাতদিন মাদক খায়। মেম্বার শফিকুল ইসলাম, তার ভাই শহিদুল ইসলাম তাদের ভাবীকে হত্যা করে মাটিতে পুতে রাখে। সেই মামলায় নিহতের স্বামী আকবর আলী এখনো কারাগারে আছে। তাদের চরিত্রই হলো মানুষের সাথে অযথা গন্ডগোল করে মারামারি করা এবং খেসারত আদায় করা।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসাইন সাগর বলেন, “বড়গাছী বাজারের উন্নয়নে সরকারিভাবে শেড নির্মাণ হবে। এসিল্যান্ড মহোদয় ১৩ এপ্রিল সেটা পরির্দশনে আসেন। এসিল্যান্ড চলে গেলে আমারই পরিষদের মেম্বার শফিকুল ইসলাম শফি সেখানে উপস্থিত হয়ে অশ্লিল ভাষায় গালাগালি শুরু করে। নিষেধ করতে গেলে সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে উপস্থিত জনগণ তার ওপর চড়াও হলে সে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময়ে রাস্তার ড্রেনে পড়ে গেলে ড্রেনের ভিতরে থাকা রডে তার মাথা ফেটে যায়। আমি নিজে থেকে লোকদের বলে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রামেকে পাঠায়। পরে আমার ও আমার বাবার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছেন”।
তিনি আরো বলেন, “আমার বাবা এমদাদুল হক দীর্ঘদিন থেকে পবা উপজেলা যুবলীগের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। আমিও অল্প বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমরা বাবা ও আমি এলাকার উন্নয়ন এবং মানুষের সেবা করতে চাই। একটি মহল আমাদের এ সুনাম নষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
এব্যাপারে মেম্বার শফিকুল ইসলামের ব্যহৃহত মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৩ | সময়: ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর