সর্বশেষ সংবাদ :

খরুচে মুস্তাফিজ, রোমাঞ্চকর ম্যাচে দিল্লির হার

স্পোর্টস ডেস্ক: শেষ তিন বলে যেন এলোমেলো হয়ে গেলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দুই ছক্কায় দিলেন ১৩ রান। সমীকরণ হয়ে গেল একদম সহজ। ৬ বলে প্রয়োজন ৫ রান। তবে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন আনরিখ নরকিয়া। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের দুই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানকে আটকে রাখলেন শেষ বল পর্যন্ত। নাটকীয় লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত অবশ্য জিততে পারল না দিল্লি ক্যাপিটালস।
মুস্তাফিজদের ৬ উইকেটে হারিয়ে আসরে প্রথম জয়ের মুখ দেখল মুম্বাই। এনিয়ে চার ম্যাচ খেলে এখনও কাঙ্ক্ষিত সেই স্বাদ পায়নি দিল্লি। ১৭২ রান নিয়ে দিল্লি শুরুতে বাজে বোলিং করলেও পরে ঘুরে দাঁড়ায় দারুণভাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি তারা। তাদের পুঁজি শেষ বলে ছুঁয়ে ফেলে মুম্বাই।
ইয়র্কার দিয়ে শেষ ওভারটি শুরু করেন নরকিয়া, আসে ১ রান। পরের বলে টিম ডেভিডের ক্যাচ ছাড়েন মুকেশ কুমার। তৃতীয় বলটি ছিল লেগ সাইডে ইয়র্কার, শুরুতে আম্পায়ার ওয়াইড দিলেও রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্তে বদল আনে দিল্লি। পরের দুই বল থেকে আসে দুটি সিঙ্গেল। শেষ বলে দুই রানের প্রয়োজনে নরকিয়ার বলটি কোনোমতে লং-অফে ঠেলেই দুই রান নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন ডেভিড। ওয়ার্নার থ্রো ঠিকঠাক করতে পারলে রানআউটের সুযোগ ছিল। কিন্তু দিল্লি অধিনায়ক থ্রো করেন কিপারের মাথার অনেক ওপরে।
আসরে নিজেদের পথচলা শুরুর আগে বাংলাদেশ থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে মুস্তাফিজকে উড়িয়ে নিয়ে গেলেও প্রথম তিন ম্যাচে খেলায়নি দিল্লি। চতুর্থ ম্যাচে খেলতে নেমে দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি বাঁহাতি এই পেসার। ছন্দহীন বোলিংয়ে ৪ ওভারে দেন ৩৮ রান। মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মার উইকেটটি অবশ্য তিনি নেন।
২৪ বলের মধ্যে মুস্তাফিজ ডট দেন ১১টি। হজম করেন ৫ চার ও ২ ছক্কা। রান ডিফেন্ড করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন ওয়ার্নার। প্রথম বল ডট দিলেও পরের তিন বলে তিনটি চার হজম করেন তিনি।
তাকে লং-অফ দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন ইশান কিষান। পরের বলটি একটু টেনে করেন মুস্তাফিজ। স্রেফ টাইমিং করে ডিপ থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান কিষান। পরেরটি ছিল লেংথ বল, মিড-অফ ফিল্ডারের মাথার ওপর দিয়ে চার মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মুস্তাফিজ ওভার শেষ করেন ১৩ রান দিয়ে। পাওয়ার প্লেতে আর বল পাননি মুস্তাফিজ। তাকে আক্রমণে আনা হয় পঞ্চদশ ওভারে। কাটার, ইয়র্কার, স্লোয়ার বাউন্সারে দুর্দান্ত বোলিং উপহার দেন তিনি। ওই ওভার থেকে আসে কেবল ২ রান।
স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে মুস্তাফিজকে পরের ওভারে স্বাগত জানান রোহিত। পরের তিন বলে কোনো রান দেননি মুস্তাফিজ। পঞ্চম বলে রোহিতকে ফেরান তিনি। লম্বা সময় পর আইপিএলে ফিফটি করা মুম্বাই অধিনায়ক ৬ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ৬৫ রান। বলটি ছিল ওয়াইড ইয়র্কার, থার্ডম্যান দিয়ে খেলতে চেয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি রোহিত। তার ব্যাট হালকা ছুঁয়ে যাওয়া বল ডানদিকে ঝাপিয়ে চোখধাঁধানো ক্যাচ নেনে অভিষেক পুরেল। ওভারের শেষ বলে মুস্তাফিজকে চার মেরে দেন ক্যামেরন গ্রিন।
শেষ দুই ওভারে যখন ২০ রান চাই মুম্বাইয়ের, মুস্তাফিজে আস্থা রাখেন ওয়ার্নার। প্রথম ৩ বলে কেবল ১ রান দিয়ে বাঁহাতি পেসার শুরুটা করেন দারুণ। কিন্তু তিন বলে ডেভিড ও ক্যামেরন গ্রিন একটি করে ছক্কা মারলে ওভার হয়ে যায় খরুচে। এরপর নরকিয়ার চমৎকার বোলিং ও শেষের নাটকীয়তায় মুম্বাইয়ের জয়।
দিল্লিকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেওয়ার পথে ৫ ছক্কা ও ৪টি চারে ২৫ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন আকসার প্যাটেল। এক প্রান্ত আগলে রেখে ৬ চারে ৪৭ বলে ৫১ রান করেন ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়ান তারকা ব্যাটসম্যানের চার ম্যাচে এটি তৃতীয় ফিফটি।


প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ