নাটোরে কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদন্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড

নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের সিংড়ার এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ছয় জনকে মৃত্যুদন্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে দন্ডপ্রাপ্ত সকলকে লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাটোর জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তরা হলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার ধানাইদহ গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মোঃ সাব্বির আহমেদ, একই উপজেলার জামাইদিঘা গ্রামের রেজাউল করিম ভুট্রোর ছেলে মোঃ রেজাউনুল ওরফে রাব্বী, সিংড়া উপজেলার নাছিয়ার কান্দি গ্রামের আব্দুর রশিদ মন্ডলের ছেলে মোঃ নাজমুল হক, একই উপজেলার মহিষমারি গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মোঃ রাজিবুল হাসান, দেবত্তর গ্রামের মোঃ রিপন ও কলম মির্জাপুরের মোঃ গেদার ছেলে মোঃ শহিদুল ইসলাম।

 

 

 

যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন, সিংড়া উপজেলার মহিষমারি গ্রামের আয়চান প্রামানিকের ছেলে মোঃ মনিরুল ইসলাম, কলম মির্জাপুর গ্রামের হাসান আলী ফকিরের ছেলে মোঃ খায়রুল ইসলাম, মোঃ নজরুল ইসলামের ছেলে আতাউল ইসলাম, আবেদ আলীর ছেলে মোঃ রেজাউল করিম। রায়ে জরিমানার পুরো টাকা গণ ধর্ষনের শিকার সেই কলেজ ছাত্রীকে প্রদানের জন্য নিদের্শ দেয়া হয়েছে। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। ২০১২সালে তার মেয়ে রাজশাহীর একটি সুনামধন্য সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়তো। ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে কলেজে জরুরী কাজের কথা বলে তার মেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

 

 

 

এ সময় পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মোঃ সাব্বির আহমেদ ফুসলাইয়া অপহরন করে সিংড়া পেট্রো বাংলা এলাকায় অবস্থান বড়াইগ্রাম উপজেলার জামাইদিঘা গ্রামের রেজাউল করিম ভুট্রোর ছেলে রেজাউনুল ওরফে রাব্বীর মালিকানাধীন হাবিব ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে অন্য আসামীরা সহ দুটি ভ্যান গাড়িতে করে বেড়ানোর কথা বলে উপজেলার কলম মির্জাপুর গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। রাত হয়ে যাওয়া কলেজ ছাত্রী বাড়ি ফেরার জন্য চাপাচাপি করলে আসামীরা তাকে ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে। পরে সকলে মিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলম মির্জাপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠের পাশে নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় গণধর্ষণ করে। পরে কলেজ ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় থাকতে দেখে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে উদ্ধার করে এবং আসামীদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

 

 

 

পুলিশ কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং বাদীকে খবর দেয়। পরের দিন বাদী এ বিষয়ে অপহরণ ও গণধর্ষণের অভিযোগে ১১জনের নামে মামলা দায়ের করে। আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে দোষি প্রমানিত না হওয়ায় কলম মির্জাপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে মোঃ নাসির নামে একজনকে খালাস প্রদান করেন এবং অপর ১০জনকে দন্ড প্রদান করেন।

 

রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত মোঃ সাব্বির আহমেদ ও রাজিবুল হাসান এবং খালাসপ্রাপ্ত মোঃ নাসির পলাতক ছিলেন। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান ও আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট নাজমুল হক আদালতে  উপস্থিত  ছিলেন। উভয় আইনজীবী রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পলাতক আসামীরা যখন আটক হবে তখন থেকেই এই রায় কার্যকর হবে বলেও আইনজীবীরা জানান। রায়ে বাদী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৩ | সময়: ৪:২৬ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর