মাহে রমজান

সানশাইন ডেস্ক : রমজান ট্রেনিং ও প্রশিক্ষণের মাস। সে প্রশিক্ষণ কাজে লাগাতে হয় সারা বছর। ইসলাম ধর্মের ইবাদতগুলো শুধু অনুষ্ঠানসর্বস্ব নয়। ইবাদত পালনের পাশাপাশি ইবাদতের মধ্যকার দর্শন ও অন্তর্নিহিত শিক্ষানুযায়ী জীবনযাপনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে ইবাদত পালনের সার্থকতা। রোজার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো তাকওয়া অর্জন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের আগের লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া বা পরহেজগারি অর্জন করতে পারো।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
রমজান মুসলমানদের জীবনে পরিবর্তন আনার মোক্ষম সুযোগ। তাই রমজানের পর পরিবর্তিত জীবনে ফিরে যাওয়াই রমজানের দাবি। কেননা রোজা নিছকই উপবাস থাকা, পানাহার ও কামাচার বর্জনের নাম নয়। এর বিশেষ তাৎপর্য ও দর্শন রয়েছে। রয়েছে এর দৈহিক, আত্মিক, নৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উপকারিতা।
হাকিমুল উম্মত আল্লামা আশরাফ আলী থানভি (রহ.) বলেন, ‘মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও আবেগের ওপর বিবেকের সর্বদা প্রভাব বিস্তার করা উচিত। কিন্তু মানবীয় দুর্বলতার কারণে অনেক সময় বিবেকের ওপর মানুষের আবেগ প্রাধান্য লাভ করে। তাই আত্মশুদ্ধি ও আত্মজাগৃতির জন্য ইসলাম রোজাকে মৌলিক ইবাদতগুলোর অন্তর্ভুক্ত করেছে। রোজা রাখার দ্বারা মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও আবেগের ওপর বিবেক পরিপূর্ণভাবে বিজয়ী হয়। এতে তাকওয়ার গুণাবলি অর্জিত হয়। রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের নিজের অক্ষমতা ও অপারগতা এবং আল্লাহ তাআলার বড়ত্ব ও কুদরতের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়। রোজার মাধ্যমে অন্তর্দৃষ্টি খুলে যায়, দূরদর্শনের ধারণা প্রবল হয়। আসবাব ও উপকরণের হাকিকত খুলে যায়। পাশবিকতা ও পশুত্ব অবদমিত হয়। ফেরেশতাদের নৈকট্য লাভ হয়। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের সুযোগ হয়। অন্তরে মানবিকতা ও সহমর্মিতার বন্যা বয়ে যায়। রোজা দেহ-আত্মার সুস্থতার কারণ। রোজা মানুষের জন্য এক রুহানি খাদ্য, যা পরকালে মানুষের জন্য খাদ্যের কাজ দেবে। সর্বোপরি রোজা আল্লাহর ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন।’ (আহকামে ইসলাম আকল কি নজর মে, পৃষ্ঠা ১৪৩-১৪৫)


প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২৩ | সময়: ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ