উপজেলা পরিষদের প্রথম গাড়িটির এখন শেষ দশা

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: বাগমারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে কালের সাক্ষী হয়ে ভগ্নদশায় পরিত্যাক্ত পড়ে রয়েছে চল্লিশ বছরের পুরোনো সেই গাড়ি। গাড়িটি ঘিরে রয়েছে কত না সৃতি। রয়েছে হাসি-আসন্দ। সেই আশির দশকের কথা। তখন এরশাদের শাসনামল। প্রথম উপজেলা পরিষদ গঠন হল। প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন ভবানীগঞ্জ কলেজের তৎকালিন অধ্যক্ষ আজাহার আলী। তার নামে গাড়ি আসলো। উপজেলায় ছিলনা কোন পাকা রাস্তা। গোটা উপজেলায় একমাত্র গাড়ি। গাড়ি দেখতে শতশত লোকের সমাগম। তখন ফকিরনী, বারনই নদীতে ছিলনা কোন ব্রিজ। তালতলি ঘাটে দুই নৌকা জোড়া দিয়ে পার হয়ে পুঠিয়ার রাস্তা দিয়ে গাড়ি যেত রাজশাহী। দু’পাশ ধুলোয় অন্ধকার। লোকজন ছুটে আসতো রাস্তায় গাড়ি দেখতে। কতই কদর ছিল সেই গাড়ির। আজ সেটি পরিত্যাক্ত। আজে নতুন প্রজন্ম ও নেতৃত্বের কাছে সেদিনের বাগমারা সেদিনের সেদিনের বাগমারা আছে স্মৃতিময় শিক্ষনীয় হয়ে।
উপজেলা সাংস্কৃতিক একাডেমির তৎকালিন গানের শিক্ষক ইব্রাহীম হোসেন জানান, কালের সাক্ষী সেই গাড়িটি আজো টিকে আছে দেখে আমি অবাক হচ্ছি। ওই গাড়িটিতে আমরা প্রথম রাজশাহী বেতারে অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলাম। তখন ছিলনা এ্যামবুলেন্স। মুমূর্ষ রোগিকে এই গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হত রাজশাহী।
একই প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু জানান, রাজশাহী বেতারে অনুষ্ঠান করে আসার পর তৎকালিন উপজেলা চেয়ারম্যান আজাহার আলী আমাদের পুরস্কৃত করেছিলেন। আজ তিনি পরপারে। সফল চেয়ারম্যান হিসাবে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ৯০’ এ এরশাদ পতনের পর কিছু সময় উপজেলা নির্বাচন বন্ধ থাকে। পরে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া।
গাড়ি নিয়ে অভিব্যক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, গাড়িটি দীর্ঘদিন পড়ে থেকে অকেজো হয়ে যায়। পরে তা মেরামত করে চালু করা হয়। এর পর নতুন গাড়ি বরাদ্দ করে সরকার। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আ’লীগের জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও বর্তমান চেয়ারম্যান একই দলের অনীল কুমার সরকার ওই গাড়ি নিয়ে অতীত দিনের মধুর স্মৃতি ব্যক্ত করেন।
কালের সাক্ষী এই গাড়ি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সুফিয়ান একই অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, গাড়িটি নতুন প্রজন্ম ও নেতৃত্বের কাছে শিক্ষনীয় বটে। এ জন্য এটি সংরক্ষণ করে রাখা দরকার।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩ | সময়: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ