ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের ‘আভাস’ পেয়েছেন কাদের

সানশাইন ডেস্ক: আগামী ডিসেম্বর মাসে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোট হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আভাস পাওয়ার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের নেতা-কর্মীদের সেজন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি ‘গুজব মোকাবিলায়’ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, “আমাদের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে চলছে, হোপফুলি নির্বাচন কমিশনের আভাস অনুযায়ী আমাদের ডিসেম্বর মাসেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।”
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত নির্বাচনের সম্ভাব্য কোনো তারিখ দেওয়া হয়নি। তবে সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। কারণ, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সেই হিসাবে ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে ভোট হতে হবে।
নির্বাচনে সরকার কোনো পক্ষপাতিত্ব বা কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না বলেও নিশ্চয়তা দেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার সরকার শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে সরকার।”
জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে গুজবের দিকে নজর রাখার পরামর্শও দেন কাদের। তিনি বলেন, “আজকে আমরা সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনের দিকে অভিযাত্রা শুরু করেছি। জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আমাদের দেশে রাজনীতিতে, ইলেকশন আসলেই দেখা যায় একটা শঙ্কা, নানা ধরনের গুজব ডালপালা বিস্তার করে।”
বিএনপির কর্মসূচি ও এর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের যে কর্মসূচি তা নিয়েও কথা বলেন তিনি। বলেন, “রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে প্রথম থেকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করলেও তারা সব কিছুতেই আওয়ামী লীগকে শত্রু পক্ষ মনে করে। আজকে আমরা কোনো কর্মসূচি দিলেই কিছু সংবাদ মাধ্যম বিএনপির কথাটাকে প্রতিদ্বন্দ্বী করে। বিএনপি বলছে পাল্টাপাল্টি, আমরা তো পাল্টাপাল্টি সভা, সমাবেশ করছি না।
“তারা (বিএনপি) গত এক বছর ধরে মাঠে এসেছে, বিশেষ করে ডিসেম্বরে। তারা আন্দোলন করবে, গণঅভ্যুত্থান করবে, ১১ ডিসেম্বর থেকে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে, তারেক রহমান গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেবে, এসব বড় বড় কথা তারা বলেছে। কিন্তু দেশবাসী লক্ষ্য করেছে যে, আমরা সন্ত্রাসের আশঙ্কায়, বিশেষ করে পুরোনো তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে তাদের আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কায় আমরা শান্তির সমাবেশ করেছি। যতক্ষণ বিএনপি আন্দোলন করবে আমরা শান্তি সমাবেশ করব।”
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বিএনপির কাছ থেকে ‘প্রত্যাশিত আচরণ না পাওয়ার’ আক্ষেপের কথাও বলেন আওয়ামী লীগ নেতা কাদের। তিনি বলেন, “আমরা প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্ক চেয়েছি, কম্পিটিশন চেয়েছি। তারা সব সময়, তাদের জন্ম থেকে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, একুশে অগাস্টের ঘটনা, ২০০১ সাল, সব কিছুতেই তারা আমাদেরকে বরাবরই শত্রুপক্ষ মনে করে আসছে। শত্রুপক্ষ হিসেবে তারা আমাদের সঙ্গে শত্রুতাই করে গেছে। এই শত্রুতার অপরিহার্য সঙ্গ ষড়যন্ত্র। এটা তারা আমাদের সঙ্গে করেছে।”
অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, উপপ্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনিবাহী সদস্য শাহাবউদ্দিন ফরাজী, সানজিদা খানম যৌথ সভায় অংশ নেন।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩ | সময়: ৪:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ