গোদাগাড়ীর বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শোকজড

গোদাগাড়ী প্রতিনিধি: ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য রাজশাহীর গোদাগাড়ীর আ.ফ.জি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানকে শোকজ দিয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলম।
গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলম স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়েছে আ.ফ.জি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমানকে। সেইসাথে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসদাচারণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা তার সুম্পষ্ট লিখিত জবাব পত্র প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
কারণ দর্শানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ডিএনসি শীর্ষক স্কিমের আওতায় উপজেলায় ৬-৭ জানুয়ারি, ১৩-১৪ ও ১৫ জানুয়ারি মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদানরত শিক্ষকদের কারিকুলাম প্রশিক্ষণের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণের ভেন্যু হিসেবে নির্বাচন করা হয় এবং আপনাকে যথারীতি উক্ত ভেন্যুর সমন¦য়ক হিসাবে দায়িত¦ প্রদান করা হয়।
আপনার কয়েকজন কর্মচারীকে সাপোর্ট সার্ভিস দেয়ার জন্য মনোনীত করা হয়। প্রশিক্ষণ যথা নিয়মে পরিচালিত হওয়ার পর কোর্স সমাপনির দিন ১৫ জানুয়ারি বিকেল ৪ টার দিকে প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীদের সম্মানী প্রদানের সময় আপনি বলেন, কোথায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের লোকজন ‘ধর শালাকে, বাঁধ শালাকে, সবাইকে ঘরে ভরে তালা মার’। আমার কর্মচারীরা আপনাকে শান্ত করার জন্য কিছু বলতে গেলে আপনি তার উপর মারমূখী চড়াও হয়ে তাকে প্রহার করার জন্য উদ্যত হলে আপনার কয়েকজন স্টাফ আপনাকে নিবৃত করে। এহেন উদ্ধত¦পুর্ণ আচরণ অসদাচারণের সামিল।
তাছাড়া প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুসÍক বিতরণের লক্ষ্যে আপনার প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি রুমে বই রাখা হয়। আপনি আক্রোশ বশত আমার কর্মচারীকে বলেন, এক্ষুনি বই সরিয়ে ফেল, নইলে সব বই মাঠের মধ্যে ফেলে দিবো।
নতুন কারিকুলাম প্রশিক্ষণ সরকারী প্রোগ্রাম। প্রশিক্ষণ চলাকালীন আপনার এহেন আচরণ সরকারী কাজে বাধা দেয়া তথা বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করা। ছাত্র-ছত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ বর্তমান সরকারের একটি মহোতি উদ্যোগ। সরকারী সম্পদ আপনার তত¦াবধানে রাখা হয়েছে।
এ সমস্ত সরকারী সম্পদ কোন কারণ ছাড়াই আপনি তশ্রুপাত তথা বিনষ্ট করার হুমকি প্রদান করে সরকারী অর্থ অপচয় শৃংঙ্খলা ও আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান সেই দিনের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, হ্যাঁ সামান্য কিছু ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি নাটোরে গ্রীণ ভ্যালি পার্কে আছেন, এসব বিষয়ে পরে কথা বলবো বলে জানান।
ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের ডাক কাম নৈশ প্রহরী আবুল হোসেন, অফিস সহকারি আনওয়ারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, সেদিন প্রায় ৬০০-৭০০ জনের ট্রেনিং শেষে প্রত্যেকে সম্মানি দিতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। এই সময় প্রধান শিক্ষক তাদের কর্মচারীদের টাকা নেওয়ার জন্য তোরজোর করে।
একপর্যায়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদেরকেউ অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলতে থাকে। তাকে এই সব কর্তবার্তা কেন বলছেন বলা মাত্রাই ক্ষিপ্ত হয়ে নৈশ প্রহরী আবুল হোসেন কে মারতে উদ্ধত হলে অন্যান্যরা থামিয়ে দেয়। তার এমন আচরণে খুবই দুঃখ পেয়েছি বলে জানান।
এই বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল আলমের সাথে ফোনে কল ও এসএমএস দিয়েও ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপার ভাইজার আব্দুর রহমান বলেন, সেই দিনের ঘটনায় আমাদের স্যার আ.ফ.জি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ করেছেন। শেষ পর্যন্ত কি অবস্থা তা আমি আর বলতে পারবো না বলে জানান।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩ | সময়: ৭:০১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ