সর্বশেষ সংবাদ :

দুই-তিনটি’ জয়ের আশা নিয়ে বিশ্বকাপ অভিযানে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: বয়সভিত্তিক নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল এখন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারা সেই দেশে থাকতেই এবার বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ছোটদের সাফল্য থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে বড়দের বিশ্বকাপে ভালো করার আশা করছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অষ্টম আসর। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অনুশীলনের জন্য বিশেষ ক্যাম্প করতে সোমবার সন্ধ্যায় দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস তেমন ভালো নয়। আগের চার আসরে মোট ১৭ ম্যাচ খেলে জয় স্রেফ ২টিতে। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠের টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এখনকার অধিনায়ক নিগারের তখনও অভিষেকও হয়নি। গত ৯ বছরে তিন আসরে কোনো জয় পায়নি তারা।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে টানা ১২ ম্যাচ হেরে এবারের আসরে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশে ছাড়ার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অধিনায়ক নিগার বললেন, হারের ধারায় এবার ছেদ টানতে চান তারা। “অনেকদিন আগে আমরা একটা ম্যাচ জিতেছি…আমাদের এবার লক্ষ্য হলো… আমার চতুর্থ, অন্যান্যদের হয়তো পঞ্চম বিশ্বকাপ… তো সবারই ইচ্ছে এবার যেন আমরা রেকর্ডটা ভাঙতে পারি।”
“আমার মনে হয় আমরা শুধু একটা মোমেন্টাম পাওয়া থেকে দূরে আছি। প্রথম ম্যাচে যদি একটা ভালো মোমেন্টাম পাই, সেটা ধরে রাখতে পারলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। যাদের সঙ্গে এবার খেলা, গ্রুপ পর্বে দুই-তিনটা ম্যাচ বের করে নিয়ে আসা সম্ভব আমার মনে হয়। শুধু একটা মোমেন্টাম দরকার আমাদের।”
গ্রুপ পর্বে ‘দুই-তিনটি’ ম্যাচ বের করে আনার কাজটি অবশ্য সহজ হবে না মোটেও। গ্রুপসঙ্গী শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ৮ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় স্রেফ ২টি। সেই ২ জয় ছিল প্রথম দুই দেখায়। এরপর লঙ্কানদের কাছে হারতে হয়েছে টানা ৬ ম্যাচ। আরেক গ্রুপসঙ্গী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দেখায় জয়ের পর হারতে হয়েছে টানা ৯ ম্যাচ। ‘এ’ গ্রুপে অন্য দুই দল নিউ জিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে চার ম্যাচে কখনও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া তো মেয়েদের ক্রিকেটের ‘সুপার পাওয়ার।’ খুব বড় কোনো অঘটন না ঘটলে তাদের সঙ্গে জয়ের আশা করা কঠিন।
তবে লক্ষ্য পূরণে নিগারদের টাটকা অনুপ্রেরণাও আছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় চলতি অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। একই দেশে ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে আকবর আলির দল। নিগারের মনেও দোলা দিচ্ছে সেই ভাবনা। “আমার কাছে এটাও মনে হয়, যেহেতু অনূর্ধ্ব-১৯ দল ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া অনেক ভালো হবে। ভালোর থেকে ভালোটা শেখা উচিত।”
শুধু অনুপ্রেরণাই নয়, নিগারের দলে আছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দলের ৪ জন- দিশা বিশ্বাস, মারুফা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার ও দিলারা আক্তার। তাদের দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলার অভিজ্ঞতা বড়দের বিশ্বকাপেও কাজে লাগতে পারে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“ওরা (অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা) এরই মধ্যে ওখানে ম্যাচ খেলেছে। আমাদের চেয়ে ওরা ভালো ছন্দে আছে। তারা একটা ভালো মোমেন্টামের ভেতরে আছে। মারুফাকে দেখছি নিয়মিত ভালো বল করছে, নিউজিল্যান্ডেও ভালো পারফর্ম করেছে। দিশাও ভালো করছে।”
“সব মিলিয়ে যে তিনজনকে (আসলে ৪) নেওয়া হয়েছে…স্বর্ণা তো বরাবরই ভালো ব্যাট করছে, যেটা আমাদের দলের জন্যও লাভজনক হবে। যেহেতু তারা এরই মধ্যে ওখানে আছে, আমার কাছে মনে হয় একাদশে সুযোগ পেলে দলের জন্য সাহায্য করবে অনেক বেশি।”
১২ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান। মূল আসর শুরুর আগে ৩১ জানুয়ারি ও ২ ফেব্রুয়ারি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি আনঅফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন নিগাররা। এরপর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান (৬ ফেব্রুয়ারি) ও ভারত (৮ ফেব্রুয়ারি)। বাংলাদেশ দলের কোচ শ্রীলঙ্কার সাবেক ব্যাটসম্যান হাশান তিলকরত্নে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩ | সময়: ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ