মহেশপুরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল পৌঁছে দিল ‘দ্যা ড্রিমার্স’ 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ

ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ৭ টা বেজে ৪৫ মিনিট। হঠাৎ বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়লেন কয়েকজন তরুণ। শীতে জীর্ণ শীর্ণ হয়ে কাঁপতে থাকা আইনালের হাতে তুলে দিলেন একটি কম্বল। কিছু বুঝে উঠার আগেই এই উপহার পেয়ে চোখে মুখে আনন্দের ছোয়া ফুটে ওঠে মহেশপুর উপজেলার ডালভাঙা গ্রামের এই বৃদ্ধোর। শুধু আইনাল নয়, তার মতো শতাধিক শীতার্ত অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল পৌঁছে দিয়েছেন শিক্ষার্থী ও সামাজিক কল্যাণমূলক সংগঠন ‘দ্যা ড্রিমার্স’ এর সদস্যরা। “আর্ত সেবায় হোক আমাদের ব্রত, উষ্ণতার ছোঁয়ায় উদ্ভাসিত হোক মানবতা” এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে তারা মঙ্গলবার কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এসব শীতার্ত মানুষদের হাতে কম্বল তুলে দেন।

 

 

এ বিষয়ে দ্যা ড্রিমার্সের সভাপতি নাদিম পারভেজ ইমন বলেন, প্রতিবছরই আমরা দুস্থ ও অসহায় মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকি। তারই ধারাবাহিকতায় এবছরেও প্রান্তিক মানুষদের সাথে শীতের উষ্ণতা ভাগাভাগি করতে তাদের মাঝে আমরা কম্বল বিতরণ করেছি। শীতার্ত মানুষদেরকে কিছুটা সহযোগিতা করতে পেরে আমাদের ভালো লাগছে। ভবিষ্যতেও আমরা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কষ্ট কমানোর এ ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো।

 

 

ইমন আরও বলেন, আমরা এধরণের সামাজিক কল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে নিয়েও কাজ করছি। আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকি তার মধ্যে- অসহায় শিক্ষার্থীকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যারিয়ার গাইডলাইন সেমিনার। শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতামূলক ইভেন্ট পরিচালনা, অলিম্পিয়াড পরিচালনা করা এবং সংগঠনের মাধ্যমে মানবিক ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে কাজ করছে দ্যা ড্রিমার্স।
কম্বল বিতরণের দায়িত্বে থাকা সংগঠনটির সমাজকল্যাণ বিভাগের পরিচালক মো. সাদিকুল ইসলাম বলেন, সমাজের প্রতি আমাদের সবারই একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। এই সংগঠন আমাদেরকে সামাজিক কাজ করার মাধ্যমে দায়মুক্ত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। আশাকরি সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে আমরা প্রতিবছরই এধরণের মানবিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবো।
এর আগে কম্বল বিতরণের সময় সময় সংগঠনটির সহ-সভাপতি জুবায়ের জামিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. উসমান গনী, সমাজকল্যাণ বিভাগের পরিচালক মো. সাদিকুল ইসলাম, দ্যা ড্রিমার্স ব্লাড ব্যাংকের পরিচালক মো. আসলাম হুসাইন, বৃক্ষ ও পরিবেশ বিভাগের পরিচালক তানজীর আহমেদ চয়নসহ সংগঠনটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

মহেশপুর উপজেলার একঝাঁক তরুণের হাত ধরে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করে ‘দ্যা ড্রিমার্স’। এই সংগঠনটির সদস্যরা দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থী এবং সমাজের কল্যাণে নানা ইতিবাচক কার্যক্রম করে আসছে সংগঠনটি। সংগঠনের অন্যান্য কর্মকাণ্ডসমূহের মধ্যে রয়েছে- আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদের বাহ্যিক জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী করণ, ক্যারিয়ার গাইডলাইন সেমিনার, দারিদ্রকে সহায়তা করা, রক্তদান কর্মসূচি পরিচালনা করা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিচালনা, কৃতি শিক্ষার্থীদের সংর্ধনা, সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ প্রদান।

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ | সময়: ১০:০৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine