সর্বশেষ সংবাদ :

আশ্রয়নের সরকারী বাড়ি চান প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা কমলা

স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর: বসবাসযোগ্য একটি ঘরের জন্য আবেদন করেও ষাটোর্ধ বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধি বৃদ্ধা কমলা বেগমের ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। স্বামীহারা ওই বৃদ্ধা তার পৈত্রিক ভিটার এক চিলতে জমিতে ঝুঁকিপুর্ণভাবে নড়বড়ে টিনের ছাউনি দেয়া ঘরে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর পেয়ে শেষ জীবনে ভাল পরিবেশে জীবন কাটাতে চান কমলা বেগম। নাটোরের সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের লালোর গ্রামের ৬৬ বছর বয়সী প্রতিবন্ধি কমলা বেগম জন্ম থেকেই একটি হাত ও একটি পা বিকলাঙ্গ। স্বামী-সন্তান কেউ নেই। পৈত্রিক সম্পত্তির এক চিলতে জমিতে প্রয়াত স্বামীর হাতে তৈরি ঝুঁকিপুর্ন হয়ে পড়া টিনের ছাউনি ঘরে একাকী জীবন কাটাচ্ছেন। ঘরের বেড়া, চাল, দরজা সব নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। বহু পুরানো একমাত্র চৌকিতেই ঘুমানো, খাওয়া দাওয়াসহ সবকিছুই করতে হয়। চৌকিতে একটি পাটি বিছানো ছাড়া কিছুই নেই। তেল চিটে একটি লেপ দিয়ে কোন মতে শীত কাটে কমেলার।
প্রতিবেশীরা বলেন, যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই রয়েছে তারাই ঘর পাচ্ছেন। অথচ প্রতিবন্ধি কমলার ভাগ্যে জুটছেনা উপহারের ঘর। প্রতিবন্ধি কমলা বেগমকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর দেওয়ার দাবি করেছেন প্রতিবেশীরা।
প্রতিবন্ধি বৃদ্ধা কমলা বেগম বলেন, কয়েকবার ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর চেয়েও পাইনি। ভিক্ষা করেই চলে তার সংসার। উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে তাকে একটি প্রতিবন্ধি কার্ড দেওয়া হয়েছে। তার বাড়িতে টিউবওয়েল ও টয়লেটের কোন ব্যবস্থা নেই। কেরোসিন কিনতে না পারায় বেশির ভাগ অন্ধকারেই রাত কাটে তার। মরার আগে প্রধানমন্ত্রী যদি তাকে একটি ঘর দিতেন তাহলে ওই ঘরে আরাম আয়েশে ঘুমাতে পারতেন। বসবাসযোগ্য একটি ঘর হলে সব কষ্ট তিনি ভুলে যেতেন এবং মৃত্যুর সময় তিনি শান্তি পেতেন।
বৃদ্ধা কমলার আত্মীয় পাশের হাতিয়নদহ গ্রামের বাসিন্দা রুস্তম আলী জানান, বৃদ্ধার জন্য চেয়ারম্যান মেম্বারের কাছে একটি ঘরের জন্য আবেদন করা হয় কয়েকবার। যেহেতু ঘর বরাদ্দের জন্য ক- বিভাগ বা খ- বিভাগে সরকারের নিয়মের মধ্যে ঘর ছিল। ভূমি মন্ত্রনালয়ের ভুমি সহ যাদের ঘর দেয়া হচ্ছে সেখানেও আবেদন করা হয়।
এছাড়া নিজের জায়গায় ঘর করে দেওয়ারও আবেদন করা হয়। যেহেতু ওই বৃদ্ধা তার পৈতিক কিছু জমি পাবেন সেই জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার জন্যও মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে বলা হয়। অসহায় বৃদ্ধা তার পৈত্রিক ভিটায় প্রাপ্ত জমির ওপর একটি ঘর করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আবেদন জানান। লালোর ইউনিয়ন পরিষতের চেয়ারম্যার একরামুল হক শুভ জানান, কমলা বেগমের কোন আবেদন তিনি হাতে পাননি।
তবে নিয়মের মধ্যে কমলা বেগম ঘর পাওয়ার যোগ্য হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন তিনি।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, প্রতিবন্ধি কমলা বেগম যাতে ভাল পরিবেশে বসবাস করতে পারেন সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি নিজে এলাকায় গিয়ে কমলা বেগম সহ এলাকার মানুষদের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন। এখন জেলা প্রশাসনের বরাদ্ধ থেকে দ্রুত শীতবস্ত্রসহ তার চলার মত যতটুকু সম্ভব তা সরবরাহ করা হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ