সর্বশেষ সংবাদ :

তিনের সমাধান আফিফ

স্পোর্টস ডেস্ক: জাতীয় দল কিংবা বিপিএল মঞ্চ, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তার নেই। তবে একটা দাবি তো করতেই পারেন। যে দাবি তার কণ্ঠে শোনালো এরকম, ‘তিনে ব্যাটিং করা সব সময়ই পছন্দ আমার।’ নিজের পছন্দটা এমন দিনে বলেছেন যেদিন তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৬৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস। যেদিন ম্যাচ জিতিয়ে হয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের নায়ক। ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তার ইনিংসটি গড়ে দেয় পার্থক্য। সঙ্গে ডারউইস রসুলির মারকুটে ফিনিশিং জয়ের পথ সহজ করে দেয়।
আফিফের ইনিংসটি ছিল সাজানো-গোছানো। পাওয়ার প্লে’তে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাউন্ডারি মেরেছেন। পেসারদের ডাউন দ্য উইকেটে এসে স্রেফ টাইমিং মিলিয়েছেন। স্পিনারদের খেলেছেন সাবলীল। একদিন আগেই চট্টগ্রামের কোচ জুলিয়ান উড আফিফের স্কিল নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে পাঞ্চহিটার। বিগ হিটার নয়। স্কিলের ওপর নির্ভর করে তার ব্যাটিং।’
সেই কথারই ছাপ পাওয়া গেছে তার ইনিংসে। জুলিয়ানের সঙ্গে এসব নিয়েই কাজ করছেন বলে জানালেন এ ব্যাটসম্যান, ‘পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ হয়নি। স্কিল হিটিং নিয়ে কাজ হয়েছে। স্কিলের মধ্যে থেকে জোরে কিভাবে মারা যায়।’ শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই পাঁচে ব্যাটিং করেছেন আফিফ। একটিতে চারে। পাঁচে ব্যাটিংয়ের মানেই হলো দ্রুততম সময়ে রান তোলা। যেটা তার জন্য একটু কঠিন। কিন্তু নিজেকে নিংড়ে দিয়ে সেরাটা ঠিকই উপহার দেন এ ব্যাটসম্যান। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২৭ বলে ৩৮ রান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯ বলে ২৯, পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০ বলে অপরাজিত ২৪ তার প্রমাণ।
স্কোর অনুযায়ী এ রান যথেষ্ট নয়। কিন্তু খোলস থেকে বেরিয়ে এই কাজটা করেছেন। সামনেও করতে আপত্তি নেই। কিন্তু লম্বা সময়ের ব্যাটিংয়ে তার থেকে বেশি কিছু পাওয়া যাবে বলেই মনে করেন আফিফ, ‘আমি যেখানেই খেলি আমার চেষ্টা থাকে সেরা পারফর্ম করার। কখনো চিন্তা করি না যে আমি এই নাম্বরে নামানো হয়েছে বা ওই নাম্বারে নামনো হয়েছে। ফেভারিট পজিশন থাকে। ওইভাবেই পছন্দ করি জায়গাটা (তিন)।’
কারণটাও খোলাসা করেন এভাবে, ‘বেশি সময় পেলে আমি সব সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। পরে গিয়ে সেটা কাভার করার সুযোগ থাকে। শর্ট টাইমে গিয়ে আমার জন্য একটু কঠিন হয়ে যায়।’ জাতীয় দলের হয়ে ৬০ টি-টোয়েন্টি খেলা আফিফের এখনই সময় তিনে খেলা। এ পজিশনে দীর্ঘদিন ধরেই কাউকে থিতু করতে পারেনি দল। বিশ্বকাপে সৌম্য সরকারকে বাজিয়ে দেখা হয়েছিল। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। আফিফ হতে পারেন উপযুক্ত সমাধান। সেজন্য টিম ম্যানেজমেন্টের সেই বিশ্বাস অর্জনটাও জরুরি। বিপিএলে নিয়মিত তিনে খেলে পারফর্ম করলে কাজটা সহজ হয়ে যেতে পারে। আফিফের দৃষ্টি সেখানেই। হাসতে হাসতে সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, ‘আমার চাওয়া পূরণে আমাকেই ভালো করতে হবে।’


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ