মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মামুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা মাদক উৎপাদন করি না। তবুও দুর্ভাগ্য মাদকের যে ক্ষতি সেটি আমাদের উপর দিয়ে বয়ে যায়। হয়তো পাশ্ববর্তী দেশ বা অন্য দেশ থেকে মাদক প্রবাহিত হয়ে আমাদের দেশে আসে। সেই মাদক আমাদের সমাজকে আকৃষ্ট করে ফেলেছে। যা আমাদের যুবসমাজকে ভয়ঙ্কর একটা বিপদে ফেলে দিচ্ছে। সফলভাবে মাদক দূর করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাদকবিরোধী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় মো. আবদুল্লাহ আল মামুদ চৌধুরী আরও বলেন, মিয়ানমার থেকে মাদক আমাদের দেশে প্রবেশ করে। মিয়ানমানের সঙ্গে আমরা অনেকগুলো মিটিংয়ে মাদকের বিষয়গুলো তুলতে চেয়েছি। আমরা দেখেছি, তারা এই বিষয়ে কথা বলতে চান না। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টেছে। তাদের দেশেও মাদকের ভায়াবহতা দেখা দিয়েছে। এখন মিয়ানমার মাদকের বিষয়ে আলোচনার জন্য আন্তরিক হয়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি মাদক বন্ধ করতে। মাদক ব্যববায়ীরা এখন টার্ন করেছেন। তারা ওই (আাগের মাদক পরিবহন পথ) এসব এলাকা বাদ দিয়ে ভারতের ত্রীপুরা-মেজরাম দিয়ে মাদক নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে। এটার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আরও বলেন, রাজশাহী জেলার চারটি উপজেলা গোদাগাড়ী, পবা, বাঘা ও চারঘাট। এর সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৭২ দশমিক ৯০ কিলোমিটার। যা ২৯টি ইউনিয়নের ৭৭৩টি মৌজার সাথে সংশ্লিষ্ট। গোদাগাড়ী উপজেলার নয়টি ইউনিয়েনের সঙ্গে সীমান্ত ১১ কিলোমিটার। পবা উপজেলার ৮টি ইউনিয়েনের সঙ্গে ২৯ দশমিক ৯০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যা ভারত থেকে হোরইন এবং ফেন্সিডিল প্রবেশ করে। বাঘা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের সঙ্গে ১৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এখানে ফেন্সিডিল প্রবেশ করে। এছাড়ার চারঘাট উপজেলার ৬ ইউনিয়নের সঙ্গে ১৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যেখানে হেরোইন, ফেন্সিডিল অনুপ্রবেশ করে।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের লালগোলা হয়ে আশারাদিহা এবং সেখান থেকে বকচর গোদাগাড়ী হয়ে অধিকাংশ হোরোইন প্রবেশ করে। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী হয়ে ঢাকা পাচার হয়। সিমান্তবর্তি এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা সঙ্গবদ্ধ এবং তারা সশস্ত্র হওয়ায় অভিযান অনেক সময় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। তারপরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর অভিযান পরিচালনা করে থাকে। মাদক ব্যবসায়ীরা অনেক বুদ্ধিমান। যেহেতু এটা অর্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই তারা কোন একটা ফাঁক ফোকর বের করে মাদক চোরাচালান করে। তবে সম্মিলিত প্রচষ্টা ছাড়া কোন কাজ সফলভাবে করা সম্ভব না। তাই মাদক দূর করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্’র সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. রশীদুল হাসান, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন প্রমুখ। এর আগে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুর রহমান।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২৩ | সময়: ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ