এতিম শিশুদের নিয়ে বছরের প্রথম দিন কাটালেন কৃষি কর্মকর্তা

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভতি কি মানুষ পেতে পারেনা’। মানবতাবাদী কন্ঠশিল্পী ভুপেন হাজারিকার এই গানে উজ্জীবিত বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান। তিনি প্রতিবছর মানবতার দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠেন।
এ বছরের প্রথমদিন তিনি উপজেলার সরেরহাট এলাকার কল্যানী শিশুসদন এতিমখানার অসহায় এতিম শিশু এবং বৃদ্ধাশ্রমের প্রায় দেড় শতাধিক মানুষের সাথে নিজে খেলেন, অন্যদেরও খাওয়ালেন। তার এই মহানুভব উদ্যোগের সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বেশ কয়েকজন অফিসার।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আমার ধর্ম মানবতা। আমি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সাধ্যমতো সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষদের সহায়তা করতে চাই।
তার মতে, বছরের শেষ দিন অনেকেই ভালোমন্দ রান্ন-বান্না সহ হৈ-হুল্লোড় করে নববর্ষ উৎযাপন করেন। আবার অনেকেই প্রথমদিন বাড়িতে উন্নত রান্না সহ হোটেল-রেস্তরা কিংবা চাইনিজ-এ গিয়ে উন্নত খাবার খান।
এসব বিচার বিশ্লেষণ করে আমার মনে হয়েছে এ সকল এতিম শিশু এবং বৃদ্ধাদের ভালো খাবার পরিবেশন করা উচিত। তাই আমি এদের এক সন্ধ্যা ভালো খাবারের ব্যবস্থা করেছি।
এ সময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার নাফিজ শরিফ, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ইমরান আলী, আনছার ভিডিবি কর্মকর্তা মিলন কুমার দাস ও উপজেলা প্রতিবন্ধী কর্মকর্তা মনসুর আলী সহ এলাকার সুশীল সমাজের নেত্রীবৃন্দ ও সরের হাট কল্যানী শিশুসদন এবং বৃদ্ধা শ্রমের পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন রওফে পল্লী চিকিৎসক ডা. সমেশ।
কল্যানী শিশু সদনের মালিক মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন ওরফে ডা. শমেস বলেন, কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, প্রতিভা বা ভাগ্যের দ্বারা অসাধ্য সাধন করা যায়। কিন্তু পৃথিবীতে যারা কীর্তিমান, তারা প্রতিভার চেয়ে কঠোর পরিশ্রমকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি।
আমাদের কৃষি অফিসার সত্যিকার অর্থে একজন পরিশ্রমী মানুষ। তিনি গতবছর বিজয় দিবসের দিন এমনি ভাবে আমার এতিমদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার পূর্বে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের সরেরহাট গ্রাম। ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন ওরফে ডা. শমেস ১২ শতাংশ জমি ক্রয় করে চালু করেন একটি এতিম খানা। যার নাম দেয়া হয় ‘সরেরহাট কল্যাণী শিশু সদন।’
সেখানে এতিমদের পাশা-পাশি বৃদ্ধাশ্রম খোলা হয়। বর্তমানে এই সদনে ১৪০ জন এতিমের পাশা-পাশি ৩০ জন বৃদ্ধ অবস্থান করছেন। আর তাদের সাথে বাস করছেন সমেশ দম্পতি।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩ | সময়: ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ