শুক্রবার, ২৪শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিবাদমান জমি একপক্ষ দখল করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরীর কাটাখালী থানার আশরাফের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে আশরাফের মোড় এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে আজিজুল হক নামের ভুক্তভোগী ব্যক্তি এই অভিযোগ করেছেন।
তিনি জানান, আশরাফের মোড় এলাকায় রনহাট মৌজায়, যার জে.এল. নং- ১৮৪, দাগ নং- ২০৭৬, আর.এর খারিজ খতিয়ান নং-১০৬, রকম-ভিটা, পরিমান-.০১৫ একর, তাঁর জমি আছে। জমিটা তিনি ১৯৭৯ সালে চাচা ইউসুফ কবিরাজের নিকট থেকে ক্রয় করেন। এরপর জমি ভোগদখল করে আসছিলেন। খারিজ করে নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করে আসছেন। তবে ১৯৯৬ সালে ইউসুফ কবিরাজের মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে আবদুর রাজ্জাক ও রেজাউল দাবি করে আসছেন, তাদের বাবা এই জমি বিক্রি করেননি। তারা জমির খারিজ বাতিলের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেন। কিন্তু ভূমি অফিস জানিয়ে দেয়, জমি সঠিকভাবেই বিক্রি হয়েছে। এই জমির খারিজ বাতিল করা সম্ভব নয়।
এরপর তারা আদালতে মামলা করেন। রাজশাহীর আদালতে দু’দফা রায় হয়েছে আজিজুল হকের পক্ষে। এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। সেখানে মামলাটি বিচারাধীন। ইতোমধ্যে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন যেন কোনপক্ষই সেখানে না যায়। কিন্তু গত ৬ ডিসেম্বর আবদুর রাজ্জাক ও রেজাউলসহ তাদের স্বজনেরা জমিতে গিয়ে আজিজুলের একটি ইটের দোকানঘর ও একটি গুদাম গুড়িয়ে দেয়। রাজ্জাক গংরা প্রায়ং সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতি করেছে বলে উল্লেখ করেন তারা। এরপর তারা বেড়া দিয়ে জমিটি ঘিরে নেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ এ ব্যাপারে থানায় মামলা করতেও ডাকে। কিন্তু তিনদফা থানায় যাওয়া হলেও মামলা নেওয়া হয়নি। শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিপক্ষরা এখন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আজিজুল হক সংবাদ সম্মেলন থেকে নিজের নিরাপত্তা চান। এছাড়া জমি দখলমুক্ত করতে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে ডা. সিদ্দিক হোসেন, ইদ্রিস আলী, কাজিমুদ্দিন, আজের আলীসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাজিব বলেন, তার দাদা ইউসুফ কবিরাজ জমি বিক্রি করেননি। আজিজুল হক নিজের নামে জাল দলিল করে জমি খারিজ করে নিয়েছেন। এর তিন বছর আগেই দাদা তার দাদী হালেমা বেগমকে জমি লিখে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় জমি খারিজ করা হয়নি বলে এখন এত ঝামেলা হচ্ছে।’
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জমি-জায়গার ব্যাপারে আসলে পুলিশের কিছু করার নেই। জমিকে কেন্দ্র করে মারামারি-সহিংসতা হলে তখন মামলা হতে পারে। এখন পুলিশ কোন কিছু করতে পারে না। ঐ জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। আদালত চূড়ান্তভাবে যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তিনিই জমি পাবেন।