মা-বাবার পরিচয় না থাকলেও নিবন্ধন পাবে পথশিশুরা

সানশাইন ডেস্ক: সারা দেশের ১৬ লাখ পথশিশুকে জন্মনিবন্ধন সনদ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্মনিবন্ধনের ব্যবস্থা নিতে সরকারের পক্ষ থেকে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তার অগ্রগতি প্রতিবেদন চেয়েছিলেন আদালত।
এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন)। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা-বাবার পরিচয় না থাকলেও নিবন্ধন পাবে পথশিশুরা। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) সহকারী রেজিস্ট্রার জেনারেল সামিউল ইসলাম রাহাদ। প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ-সংক্রান্ত রিট মামলায় বাংলাদেশের সব পথশিশুর জন্মসনদ ইস্যুকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনবহির্ভূত ঘোষিত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বিদ্যমান জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন ২০০৪ এবং জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে বাংলাদেশের সব পথশিশুর জন্মসনদ ইস্যুকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন ও বিধি অনুযায়ী বাংলাদেশের সব পথশিশুর জন্মসনদ ইস্যুকরণে গৃহীত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের ব্যাপারে বর্ণনা করে আদালতকে আদেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বিবাদীদের নির্দেশ দেন।
বিদ্যমান আইন ও বিধির আলোকে বাংলাদেশের পথশিশুদের জন্মসনদ প্রদানে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ নিম্নরূপ: জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন, ২০০৪-এর ধারা ৫(১) এ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, লিঙ্গ নির্বিশেষে সব নাগরিকের জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইনে কোনও বৈষম্য করা হয়নি বা কোনও বিশেষ শ্রেণিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি। জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সব নাগরিকের অধিকার। পথশিশু এতিম, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, পিতৃ বা মাতৃপরিচয়হীন, পরিচয়হীন, বেদে, ভবঘুরে বা ঠিকানাহীন যে-ই হোক না কেন, কাউকেই নিবন্ধন থেকে বাদ দেওয়া যাবে না বা তার নিবন্ধন অস্বীকার করা যাবে না। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(গ) মোতাবেক, ‘কোনও ব্যক্তি এতিম, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তি, পিতৃ বা মাতৃপরিচয়হীন, পরিচয়হীন, বেদে, ভবঘুরে, পথবাসী বা ঠিকানাহীন বা যৌন কর্মী হওয়ায় নিবন্ধক তথ্যের ঘাটতির কারণে উক্ত ব্যক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবেন না এবং এরূপ ক্ষেত্রে যে সকল তথ্য অসম্পূর্ণ থাকিবে সে সকল স্থানে “অপ্রাপ্য” শব্দ লিখিয়া জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করিতে হইবে”। বিধি ৮(ঙ) মোতাবেক, রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে জন্ম বা মৃত্যুর ক্ষেত্রে উক্ত রাস্তা বা উন্মুক্ত স্থান যে থানার অধীন সেই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জন্ম বা মৃত্যুর তথ্য প্রেরণ করবেন।


প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২ | সময়: ৫:২২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ