বিতর্কিত সিদ্ধান্তে এলোমেলো বাংলাদেশের হতাশার বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক: স্কোরবোর্ডে লড়াকু পুঁজি নেই। চাই দুর্দান্ত বোলিং-ফিল্ডিং। ইনিংসের তৃতীয় বলেই মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহান অতি উত্তেজনায় ঝাঁপাতে গিয়ে ক্যাচ মিস করে বসেন। পরের বলেই পুল করে রিজওয়ানের ৬! তৃতীয় বলে উইকেটের সুযোগ হারিয়ে ১০ ওভার পর্যন্ত আর উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
এই ম্যাচ কি আর বের করে আনা সম্ভব? না! হয়নি। অতি অলৌকিক কিছু ঘটেনি। রোববার অ্যাডিলেডে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ১২৭ রান করে। রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ১১ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে। সঙ্গে নিশ্চিত করে সেমিফাইনাল। মাত্র দুটি বিশ্বকাপ ছাড়া সব আসরেই শেষ চার খেলছে দলটি।
বাংলাদেশের সেমিফাইনালে ওঠার অপ্রত্যাশিত সুযোগটা তৈরি করে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। যে দল জিতবে সেই দলই যাবে সেরা চারে। চাপে পাকিস্তানকে বধ করার সেরা সুযোগ ছিল এটি। কিন্তু ব্যাট হাতে ব্যর্থতার পর বল হাতে এলোমেলো বাংলাদেশ ইতিহাস গড়তে পারেনি। বিশ্বকাপে পাওয়া দুই জয় নিয়েই সাকিব আল হাসানের দলকে ফিরতে হবে দেশে।
দিনটাই যেন বাংলাদেশের ছিল না। শুরুতে ধীরে খেললেও উইকেটের সঙ্গে মেলালে রানরেট ঠিকই ছিল। ভুল আম্পায়ারিংয়ে সাকিবের আউটের পর যেন এলোমেলো। শাদাব খানের বল ব্যাটে লাগলেও আম্পায়ার আউট দেন। হতবাক হয়ে যান সাকিব। আশ্চর্যের বিষয় টিভি আম্পায়ার এই ভুল করেছেন! সাকিব আউট হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাট হাতেও যেন খেই হারিয়ে ফেলে। পরে ৫৫ বলে যোগ করে মাত্র ৫৪ রান! এখানেই পিছিয়ে যায় বাংলাদেশ।
সর্বোচ ৫৪ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তার ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ এখানেও প্রশ্নবিদ্ধ। ৪৮ বল থেকে এই রান আসে। ২৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন আফিফ হোসেন। ২০ রান করেন এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার। আবারও ব্যর্থ হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন (১১ বলে ৫) ও নুরুল হাসান সোহান (০)। পাকিস্তানের হয়ে আফ্রিদি একাই নেন চার উইকেট।
ব্যাটিংয়ের মতো এলোমেলো ফিল্ডিং হারের অন্যতম কারণ। নিশ্চিত রানআউট মিসের সঙ্গে হয়েছে অতিরিক্ত চার। শূন্যতে জীবন পাওয়া রিজওয়ান সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন। সোহান ভুল না করলে শুরুতেই চাপে পড়ে যেতো। বাবর আজম ধুঁকতে ধুঁকতে ৩৩ বলে ২৫ রান করেন। মাঝে ১৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সহজ করে দিয়েছেন মোহাম্মদ হারিস। দলকে জিতিয়ে ২৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন শান মাসুদ।
চলতি বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে দারুণ বোলিং করেন নাসুম আহমেদ। ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি। এ ছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ইবাদত হোসেন, সাকিব, মোস্তাফিজ ও তাসকিন। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষে। তবে যে ব্র্যান্ড অব ক্রিকেট খেলার কথা ছিল সেটি দেখা যায়নি। জয়ী ম্যাচ দুটোও অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিপক্ষে। ভারতের বিপক্ষে জিততে জিততেও হয়নি। আর কবে শিখবে বাংলাদেশ?


প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২২ | সময়: ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ