সর্বশেষ সংবাদ :

গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার পরিবারের দাবী হত্যা

নওগাঁ প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘিতে সৈয়দা সারা আহম্মেদ প্রিয়াসা (২৩) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। প্রিয়াসা উপজেলার রহিম উদ্দীন কলেজ এলাকার ডহরপুর মহল্লার অধ্যাপক আনোয়ারুল হকের ছেলে নাসিরুল্লাহ হক ঐক্যর স্ত্রী। দুপুর ২টার দিকে নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা।
থানা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘি রহিম উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল হকের ছেলে নাসিরুল্লাহ হক ঐক্যের (২৮) সাথে পাশ্ববর্তী নওগাঁর শহরের জনকল্যান মহল্লার জসিম উদ্দিনের মেয়ে সারার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ১১ এপ্রিল সারা ফুসলিয়ে নিয়ে সন্ধ্যায় তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন কারনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হতে থাকে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বামীর বাড়ি ডহরপুর গ্রামে ওই গৃহবধূর শয়ন ঘরের ফ্যানের সাথে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো মরদেহ দেখতে পান পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে রেখে রবিবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বড় বোন শারমিন আক্তার লাবনী বোন বলেন, আমার ছোটবোনকে ফুসলিয়ে নাসিরুল্লাহ হক ঐক্যে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। ঐক্য মাদকাসক্ত ছেলে যা আমরা পরে জানতে পারি। নানা কারনে আমার বোনকে জ্বালাতন করতো। তবে আমার বোন আত্নহত্যা করতে পারেনা। তাকে হত্যা করা হয়েছে। কারন ফ্যানের সাথে ফাঁস দিলে ফ্যান বাঁকা হয়ে থাকতো। আর জানালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করলে জানালা ভাঙ্গার চিন্হ থাকতো সে ধরনের কোন আলামত নেই। হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।
নিহতের ছোট ভাই আদনান আহম্মেদ বলেন, আমার বোনকে সব সময় নানা ভাবে জ্বালাতন করতো। এমনকি মারধরও করতো। বিয়ের পর আমার বোনকে তারা শান্তিতে থাকতে দেয়নি। ঐক্য কোন চাকুরি করতো না। বেকার ছিল। আমার বোনকে হত্যার বিচার চাই।
প্রিয়াসার মা ইয়াছমিন আহম্মেদ বলেন, পারিবারিক নানা কারনে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এখন তারা আন্তহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। থানায় গতকাল (শনিবার) আমাদের অভিযোগ নেয়া হয়নি।দুপুরে অভিযোগ নিয়েছে। আমি নিজেই থানায় অভিযোগ করেছি। তদন্তের পর নাকি সত্যতা পেলে নাকি মামলা হিসেবে রেকর্ড করবে। আমার মেয়েকে হত্যার বিচার চাই।
নাসিরুল্লাহ হক ঐক্যর মা খন্দকার নিসরাত বানু বলেন, আমার বউমা অভিমান করেই আত্নহত্যা করেছে। আমরা বা আমার ছেলে কেন তাকে হত্যা করবে। তারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিল আমরা মেনেও নিয়েছিলাম। বিয়ের পর সব পরিবারেই মান-অভিমান একটু আকটু থাকেই। অভিমান করে যে আত্নহত্যা করবে তা আমরা কেউই বুঝতে পারিনি।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.রেজাউল করিম রেজা বলেন, সৈয়দা সারা আহম্মেদ প্রিয়াসাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি সে আত্নহত্যা করেছে তা ময়নাতদন্তের পরই জানা যাবে। এ ঘটনায় সারার মা একটি অভিযোগ দিয়েছেন থানায়। আমরা সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করছি।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২২ | সময়: ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ