ঘরেঘরে নাড়ু ও নারকেলি পিঠা-পায়েসের আপ্যায়ন

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারাদীয় দূর্গোৎসব। এ যেন প্রাণের উৎসব। চারিদকে সাজ সাজ রব। আর এই উৎসবকে মাতোয়ারা করে রেখেছে নাড়ু, খৈ, মুড়ি সহ নানান পদের মিষ্টি-মিষ্টান্ন। এসব মিষ্টি-মিষ্টান্নর প্রধান অনুসঙ্গ হলো নারিকেল ও গুড়। নারিকেল গুড় দিয়েই তৈরি হয় নানান পদের নাড়ু ও পিঠা পায়েস।
তবে এবার দেশব্যাপি সকল নিত্যপন্যের ব্যাপক মূল বুদ্ধির প্রভাবও এসে পড়েছে নারিকেল গুড়ের ওপর।
সম্প্রতি উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর সহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে দূর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের নানান বয়সী নারী পুরুষের কেনাকাটার ধুম পড়েছে। যে যার সাধ্যমত জামা কাপড় থেকে শুরু করে কসমেটিক্স সহ বিভিন্ন জিনিস পত্র কিনছেন। তবে মূল আকর্ষণ হিসাবে দেখা যাচ্ছে সবার হাতেই নারিকেল গুড়। নারিকেল গুড় কিনতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। আকাশচুম্ভি হয়েছে এই দুটি জিনিসের দাম।
ভবানীগঞ্জ নিউমার্কেটের সঞ্জয় পত্রিকা বিতনের পরিচালক শ্রী সঞ্জয় কুমার কুণ্ড জানান, বাচ্চাদের জামা কাপড় শাড়ি কসমেট্রিকস সহ প্রায় সব ধরণের জিনিস কেনা হয়েছে। তবে নারিকেল গুড় কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছি। আগে ১২০-১৩০ টাকা হলেই বড় সাইজের একজোড়া নারিকেল পাওয়া যেত। এখন সেই একজোড়া নারিকেল কিনতে হচ্ছে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকায়। এছাড়া গুড়ের দামও বেড়েছে অনেক। ভালো মানের এক কেজি গুড় এখন ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। আগে এই গুড় পাওয়া যেত আশি থেকে নব্বই টাকায়।
বাগমারা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার সিংহ জানান, পূজার আগে থেকেই অতিথিদের আগমন শুরু হয়েছে। অতিথিদের নাড়ু খই সহ বিভিন্ন মিষ্টি মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করতে হচ্ছে। তবে এবার নারিকেল গুড় দুটোর দামই বেশি।
নারিকেল বিক্রেতা পাহাড়পুড়ের জব্বার জানান, নারিকেল আমদানি করতে তাদের এখন পরিবহন খরচ বেশি পড়ছে। যে কারণে নারিকেলের দাম কিছুটা বেশি পড়ছে।
তাহেরপুর হাটের গুড় বিক্রেতা ফরিদুল জানান, স্থানীয় গুড় উৎপাদনকারীদের কাছে ভাল মানের গুড় না পাওয়ায় তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গুড় আমদানী করছেন। নাড়ুর জন্য দরকার স্পেশাল চিটা গুড়। এখন নাড়ুর জন্য এই চিড়া গুড়ের চাহিদা বেশি।
নারিকেল গুড় ছাড়াও পূজা উপলক্ষে অন্যান্য জিসিপত্রের কেনাকাটার ধুম পড়েছে। যে যার সাধ্য মত এসব জিনিস পত্র কিনছেন। ভবানীগঞ্জ হিন্দুপাড়ার বিশিষ্টজন শংকর কুণ্ড জানান, শারদীয় উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসব।
এই উৎসবে শুধু নিজেদের কথা ভাবলেই চলবে না। আমাদের পাড়া প্রতিবেশি সহ আশেপাশের লোকজন যারা ব্যাপক অভাব অনটনের মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে আমাদের সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করতে হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২২ | সময়: ৬:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর