সর্বশেষ সংবাদ :

চারঘাটে বেড়েছে চুরি-ছিনতাই, উৎকণ্ঠায় সাধারণ মানুষ

 

চারঘাট প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা। এতে সাধারণ মানুষ উৎকণ্ঠায় রয়েছে। গত এক মাসে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১৩টি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

 

ভুক্তভোগীরা বলছেন, ছিনতাইকারীরা আগে থেকেই ভুক্তভোগীকে টার্গেট বানিয়ে গতিবিধি নজরে রাখেন। এক পর্যায়ে নির্জন জায়গা দেখে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ছিনতাইয়ের অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে রাত ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে। তবে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।

 

পুলিশ ও ভ্ক্তুভোগী সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের ডেলিভারি ম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বাঘা-চারঘাটে ওষুধ ডেলিভারি শেষে টাকা নিয়ে রাজশাহীতে শহরে ফিরছিলেন। চারঘাট বাজার থেকে সিএনজি গাড়িতে উঠলে আরো দুজন যাত্রী সেই গাড়িতে উঠে। গাড়ি ফায়ারসার্ভিস মোড় পার হলে অন্য দুজন যাত্রী জাহাঙ্গীর হোসেনের গলায় ছুরি ধরে মুখ বেঁধে ফেলে।

 

গাড়িটিকে মহিলা রোডের পাশে নিয়ে যেতে বলে। এক পর্যায়ে ডেলিভারি ম্যান জাহাঙ্গীরকে ছুরিকাঘাত করে ওষুধ বিক্রির ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।

 

এদিকে ১০ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মনিগ্রাম বাজারে ফল বিক্রি শেষে ভ্যান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ডাকরা গ্রামের বাসিন্দা রশিদ আলী (৪৫)। তিনি বাঁকরা বাজার পার হলে তিনজন যুবক রাস্তায় তাকে থামিয়ে টেপ দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। এসময় ফল বিক্রির নগদ ২০ হাজার টাকা, বিভিন্ন প্রকার ফলসহ ভ্যান গাড়িটি ছিনতাই করে নিয়ে যায় তারা। এ বিষয়ে রশিদ আলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

 

এর আগে ২ আগষ্ট দিবাগত রাতে উপজেলার নন্দনগাছী বাজার এলাকায় পিয়াংকা জুয়েলার্স নামের স্বর্ণের দোকানে দুর্র্ধষ চুরির ঘটনা ঘটে। দোকানের উপরের টিনের চালা কেটে ২ ভরি স্বর্ণালংকার, ৭০ ভরি রুপার অলংকার ও নগদ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করলেও থানায় কোনো মামলা হয়নি। এখন পর্যন্ত কেউ আটকও হয়নি।

 

এদিকে প্রশাসনের একেবারে নাকের ডগায় উপজেলা পরিষদ চত্বর ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরের বিভিন্ন ভবনে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়ার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল ছিনতাই এবং গরু-ছাগলসহ চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনাতেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

 

উপজেলায় ছিনতাই ও চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন সমাজ। এ বিষয়ে গত আইনশৃংখলা সভাতেও একাধিক সদস্য তাদের সংশয়ের কথা জানিয়ে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা রোধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

 

চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে উপজেলা মাদক প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, সবগুলো চুরি ছিনতাইয়ের সাথে আমরা মাদকসেবীদের সম্পৃক্ততা দেখতে পাই। চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা অনেক ঘটলেও থানায় মামলা কম হয়। মামলা হলেও প্রকৃত দোষীরা আটক হয়না। এজন্যই এসব ঘটনা বাড়ছে।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। পুলিশি কার্যক্রম চলমান আছে।

 

 

সানশাইন/তৈয়ব


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২ | সময়: ৭:৩১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর