বাঘায় আইন শৃংখলা বিষয়ে সভা পদ্মায় পানি বাড়লে মাদক কারবারীরা হয় বেপরোয়া

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত এলাকার আলাইপুর বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, নদীতে পানি বাড়লে মাদক পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে যায়। অনেক সময় ইচ্ছে শক্তি থাকার পরও তাদের আটক করা সম্ভব হয়না।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইন শৃংখলা, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন, চোরাচালান প্রতিরোধ ও নাশকতা প্রতিরোধ বিষয় নিয়ে পৃথক চারটি মাসিক সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সীমান্তরক্ষী আলইপুর (বিজিবি) কোম্পানি কমান্ডার বলেন, আমরা গত ১ মাসে সাড়ে ৩২ লক্ষ টাকার অবৈধ মালামাল জব্দ দেখিয়ে থানায় চারটি পরিত্যাক্ত মাদক উদ্ধার মামলা দায়ের করেছি।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানতে চান, শুধু পরিত্যাক্ত উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দিচ্ছেন, আসামী নেই কেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে কোম্পানী কমান্ডার আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, নদীতে পানি বাড়লে মাদক পাচারকারীরা বেপরোয়া হয়ে যায়। আমরা যে কোন সোর্স মাধ্যমে খবর পেয়ে তাদের ধাওয়া করলে ওরা মাদক ফেলে পালিয়ে যায়। এ কারনে তাদের আটক করা সম্ভব হয়না।
তিনি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কোন সহায়তা পান না বলেও অভিযোগ করেন। তবে মাদক নিয়ে কোম্পানী কমান্ডারের এমন উত্তরে মিটিংএ উপস্থিত অনেকেই নাখোশ হন।
অপরদিকে মিটিং এ উপস্থিত বাঘা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দুরুল হুদা বলেন, আমরা গত একমাসে থানায় ২১টি মাদক মামলা রেকড করা সহ ৮৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০ জন সেবন কারী রয়েছে। এ ছাড়াও আমরা প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার মাদক জব্দ করেছি।
তিনি বলেন, গত মাসিক মিটিং-এ সুদের উপর টাকা লেন-দেনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানীর করার বিষয়ে প্রস্তাবনা এসে ছিলো। আমরা চলতি মাসে থানা পুলিশ অনেকগুলো চেক ও নগদ টাকা এবং মাদক সহ একজন সুদ ব্যবসায়ীর ছেলেকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এ খবর শুনে অনেকেই তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সকাল সাড়ে ৯ টায় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জুয়েল আহাম্মেদ, আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী, বাঘা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মোকাদ্দেস, মনিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম,বাউসা ইউপি চেয়ারম্যান নুর মোহ্হামদ তুফান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কাশে ওবাইদ, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর মামুনুর রহমান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা মিলন কুমার দাস ও বাঘা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান, সকল ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক মন্ডলী, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
পৃথক চারটি সভায় বক্তারা, মাদক, সুদের ব্যবসা, হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়, গণহারে যে কোন বিষয় নিয়ে মাইকিং, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, দ্রব্য মুল্যের বাজার মনিটরিং, যানজট নিরসন, শিক্ষার্থীদের ভিডিও গেমে আসক্ত, ইমো-বিকাশ হ্যাকিং, প্রাইভেট ও কোচিং বানিজ্য, মিষ্টির দোকান মনিটরিং, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন, পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকানে-টি.ভি ক্যারামবোর্ড ও টাস খেলা বন্ধ এবং নকল প্রশাধনী জব্দ সহ রাস্তার ধারের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মুদি দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোল বিক্রীর বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২২ | সময়: ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ