সর্বশেষ সংবাদ :

শিশু আম্বিয়ার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রাণালয়

গোমস্তাপুর প্রতিনিধি: চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল বেসরকারি একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশন করে জন্ম নেয় আম্বিয়া। দুই ভাই, এক বোনের মধ্যে সে ছোট। জন্মের পর থেকে সে হাইড্রোসেফালাস অথ্যাৎ মস্তিষ্কে অতিরিক্ত পানি রোগে আক্রান্ত। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতে পারেনি পরিবারটি। জটিল রোগে আক্রান্ত শিশুটি উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের মরিচাডাঙ্গা গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল হকের মেয়ে।
স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে গত রবিবার রাতে শিশুটির দৃষ্টি আকর্ষণ করে সহায়তার আবেদন করেন। ওই লেখাটি (স্ট্যাটাস) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জাহাঙ্গীর আলম দেখেন। পরে তিনি আক্রান্ত শিশু আম্বিয়ার খোঁজ নিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক উম্মে কুলসুমকে নির্দেশ দেন।
তিনি সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে আক্রান্ত শিশুর বাড়িতে যান। সেখানে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আশ্বস্ত করে আসেন।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, শিশু আম্বিয়া জন্মের পর থেকে এ রোগে আক্রান্ত। সরকারি হাসপাতালসহ একজন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখিয়েছেন পরিবারটি। চিকিৎসক তাদের অপারেশন করার পরামর্শ দেন। অপারেশনের প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ হবে বলে পরিবারটিকে জানায়। কিন্তু দরিদ্র পিতা আজিজুল হকের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। অপারেশন আর করা হয়নি। চারমাস অতিবাহিত হয়েছে। শিশুটির মাথা আরও বড় হয়ে গেছে।
আক্রান্ত শিশুটির মা নাসরিন বেগম বলেন, হামার ছোট মেয়ে আম্বিয়াকে ডাক্তারকে দেখাইছিনু। ডাক্তার কোহেছে মাথায় পানি জমে আছে। অপারেশন করাইতে হবে। দেড় লাখ টাকা লাগিবে।
টাকা জোগাড় করতে পারিনি, অপারেশনও করাইতে পারিনি। মেয়ের অপারেশনের করাতে না পেরে হামরা খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিনু। আইজকে বড় স্যার, আপারা আইসাছে মেয়েকে দেখতে ভাল লাগছে। চিকিৎসা করাবেন আরও ভাল লাগছে। দোয়া করিবো তাদের জন্য। আল্লাহ যেন তাদের ভাল রাখেন।
রহনপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল হক বলেন, গত ১০ আগস্ট হঠাৎ আজিজুলের বাড়িতে যায়। সেখানে এসে দেখি তার এক প্রতিবন্ধী শিশু। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিককে (আব্দুল বাসির) বিষয়টি অবহিত করে নিউজ করতে বলি। তিনি সেটা তার ফেসবুক পেজে দিলে সমাজকল্যান মন্ত্রানালয়ের সচিবের নজরে পড়ে। তিনি শিশুটির খোঁজ নিতে বলেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তার মন্ত্রণালয়।
গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হামিদ বলেন, মাথায় আঘাত পাওয়াসহ নানা কারণে হাইড্রোসেফালাস রোগটি হতে পারে। তবে উন্নত চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারলে শিশুটি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।
আক্রান্ত শিশু আম্বিয়ার খোঁজ নিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক উম্মে কুলসুম বলেন, সমাজকল্যান মন্ত্রাণালয়ের সচিব স্যার আমাকে শিশুটির বিষয়ে অবহিত করেছেন। শিশুটির দেখলাম ও পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর সর্বাত্মক সহযোগিতা করে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠতে সহায়তা করে যাবে। শিশুটির খবর রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে সময়মত চিকিৎসা করানো হবে।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২২ | সময়: ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর