সর্বশেষ সংবাদ :

ক্লাশে বই না আনায় শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া সেন্ট যোসেফস স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ক্লাশে পাঠ বই না আনায় পিটিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর নাম এহসানুল কবির রাফি। সে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার চক-নটাবাড়ীয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে বৃহস্পতিবার ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে শিক্ষার্থীর বাবা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার দশম শ্রেণির বিজ্ঞান ক শাখায় ইংরেজি শিক্ষক ভেরনিকা কস্তা ইংরেজি পাঠ্য বই ক্লাশে না আনার কারনে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ক্লাশ থেকে বের করে দেন।
এসময় অধ্যক্ষ কর্তৃক মনোনীত মাধ্যমিক শাখার ইনচার্জ ফাদার পিউস পরিদর্শনে গিয়ে বই না আনায় সবাইকে গালমন্দ করতে থাকেন। এসময় রাফি নিজ মুখে হাত দিলে ফাদার পিউস তার বিরুদ্ধে মুখ ভেঙ্গানোর অভিযোগ তোলে ভেরনিকা কস্তা হাতে থাকা বেত দিয়ে রাফিকে বেধরক এলোপাথারি পিটাতে থাকেন। বেত ভেঙ্গে গেলে হাত দিয়েই মারতে থাকেন।
এসময় তার বাম ছোকে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে রক্ত উঠে যায়। পরে পরিস্তিতি বেগতিক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ফাদার পিউস বলেন, ‘অসাবধানতা বসত চোখের কোনায় লেগেছে। এ বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মায়ের সাথে বসে কথা চলছে। তিনি বলেন, এগুলো নিয়ে টেশন নিয়েন না। উটা নিয়ে সংবাদ করার দরকার দাই। বুঝেনইতো কতোজন থাকে আমাদের বিরুদ্ধে। এদিকে আসলে আমার সাথে দেখা কইরেন। সমাধান করে দিবোনি।’
অধ্যক্ষ ফাদার শংকর ডমিনিক গমেজের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে এ বিষয়েই কথা চলছে।’
রাফির বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, আমার ছেলের বাম চোখ নষ্ট হবার উপক্রম। বনপাড়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছি। এখানের ডাক্তার নাটোরে চক্ষু বিশেষজ্ঞর কাছে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, স্কুলের অধ্যক্ষসহ অন্যরা ডেকে এটা নিয়ে এখন অভিযোগ তুলে নিতে অনুরোধ করছেন। অথচ আমার ছেলেকে মেরে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে কোন শিক্ষক একবার খোঁজ পর্যন্ত নেয় নাই। তিনি আরও বলেন, ইউএনও’র নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি যে বিচার করবেন সেটাই মেনে নেবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ফাদার পিউস সেন্ট যোসফস স্কুল এন্ড কলেজের নিয়োগ প্রাপ্ত বৈধ কোন লোক নয়। অবৈধ লোক বে-আইনি ভাবে কোন শিক্ষার্থীকে আঘাত করা চরম অন্যায়। এ বিষয়ে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সাথে সরকারী এমপিও ভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠানে অবৈধ লোকের খবরদারী রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ইউএনও মারিয়াম খাতুন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রথমে অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করা হবে। তারপর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২ | সময়: ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ