শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১০ বছরের শাস্তির সুপারিশ করা হলেও তা কমিয়ে ৪ বছর করেছে প্রশাসন। গত রবিবার ২৮ মে রবিবার সিন্ডিকেট সভায় যৌন হয়রানীকারী শিক্ষক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর ৪ বছরের জন্য ইনক্রিমেন্ট ও পদোন্নতি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এমন গুরুতর অপরাধে লঘু শাস্তি প্রদানে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরাসহ তদন্তকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন ও নিরোধ সেল।
এর আগে, ২০১৯ সালের ২৫ ও ২৭ জুন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ করেন দুই ছাত্রী। অভিযোগটি নিয়ে তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ণ ও নিরোধ সেল। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বিষ্ণু কুমার অধিকারীকে ১০ বছরের শাস্তির সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয় যৌন নিপীড়ণ সেল। এরপর চলতি বছর ২৮ মে রবিবার সিন্ডিকেট সভায় সেই শাস্তি কমিয়ে ৪ বছরের জন্য ইনক্রিমেন্ট ও পদোন্নতি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে এক ভুক্তভোগী বলেন, ভেবেছিলাম প্রশাসন উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু তা না করে তাকে নামমাত্র শাস্তি দিয়ে তাকে সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি আবারও ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এখন আমি কী করে ওই শিক্ষকের সামনে যাবো? পরিবারের পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের শিক্ষকেরাই আমাদের আশ্রয়স্থল। এখন সেখানেই যদি শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তাহলে তারা কোথায় যাবে? তারাও কি আমার মতো পড়াশোনা বাদ দেয়ার চিন্তা করবে?
এই ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন ও নিরোধ সেলের প্রধান অধ্যাপক রেজিনা লাজ। তিনি বলেন, তদন্তে আমরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছি। একজন শিক্ষক যখন তার শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণ করেন তখন সমাজে নৈতিকতা বলে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। তাই আমরা অভিযোগের মাত্রা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তির সুপারিশ করেছিলাম। অথচ আমরা জানতে পেরেছি, এই শাস্তির পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেকেরও কম করা হয়েছে। অপরাধীকে এক ধরনের সুযোগ করে দিল বলেই প্রতীয়মান হয়। যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপাচার্যের কিছু করার থাকে না। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত সদস্যরাই সম্মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। কারো একার কিছু করার নেই এখানে। ভুক্তভোগী ও তদন্ত কমিটির হতাশার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আইন কিংবা নিয়ম-কানুন সবসময় সবাইকে খুশি করতে পারে না। এখানে সিন্ডিকেট সদস্যরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।