বাগমারায় স্ট্যাম্প ও চেকসহ একজন গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে রাজশাহীর বাগমারা থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার আক্কেলপুর ঋণদান নিবন্ধনহীন সমিতি থেকে বিপুল পরিমান নন-জুডিশিয়াল ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। ঋণদান সমিতিতে অবৈধ লেনদেনের সময় রাকিবুল ইসলাম (৩২) নামের এক যুবককে আটক করেছে। তিনি উপজেলার আক্কেলপুর গ্রামের বাসিন্দা বলে বাগমারা থানার পুলিশ জানিয়েছেন। ওই ঘটনায় গনিপুর গ্রামের ভুক্তভোগী আশরাফুল নামের এক যুবক বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বাগমারা থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আক্কেলপুর, দক্ষিন দৌলতপুর ও গনিপুর গ্রামের কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সংঘবদ্ধ হয়ে ওই এলাকায় ঋণের নামে দাদন ব্যবসা শুরু করেন। দাদন ব্যবসার জালে পড়ে অনেকেই জমিজাতি বিক্রি করে পথে বসে। টাকা দিতে না পারায় প্রায় ২০ থেকে ৩০ টি পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঋণদানের নামে এলাকার সহজসরল ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৫০/= থেকে ৩০০/= টাকার নন-জুডিশিয়াল ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও ব্যাংকের স্বাক্ষরিক চেকবহি জমা নেন। যে পরিমান ঋণ প্রদান করা হয় তার ডবল টাকা দিলেও তাদের ঋণ সুদ করা যায় না। কেউ কেউ জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েও তাদের ঋণের জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। টাকা দিতে দেরী হলেই তাদের উপর চলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক নির্যাতন। এই ভাবেই এলাকার অসহায় মানুষদের উপর চলে জুলুম নির্যাতন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে আটকে রেখে নানা ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।
অভিযোগকারী আশরাফুল ইসলাম জানান, দক্ষিন দৌলতপুর আশার আলো ঋণদান সমিতি থেকে তিনি সংসারের অভাব অনটন মেটানোর জন্য ৭০(সত্তর) হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করেন। দুই লক্ষ দশ হাজার টাকা দেয়ার পরেও তার এক লক্ষ টাকার বেশী ঋণ রয়েছে বলে সমিতির পরিচালকেরা জানান। টাকা না দেয়ায় তার উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে সমিতির লোকজন। কোন উপায় না পেয়ে বৃহস্প্রতিবার সন্ধ্যায় কয়েকটি অনিবন্ধীত সমিতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগ পেয়ে রাতেই বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান সাদা ট্যাম্প ও বিভিন্ন ব্যাংকের চেক উদ্ধার করে। ওই সময় অবৈধ লেনদেনের সময় রাকিবুল ইসলাম নামের সমিতির এক সদস্যকে আটক করে থানায় আনে। পুলিশ আটককৃত রাবিকুল ইসলামকে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গনিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে অবৈধ সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে অসহায় মানুষদের নাভীশ্বাস করেছেন এলাকার কয়েকটি প্রভাবশালী ব্যক্তি। যার কারনেই ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান সাদা ট্যাম্প ও স্বাক্ষর করা ব্যাংকের চেক উদ্ধার ও রাবিকুল ইসলাম নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপতারকৃত রাকিবুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।


প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২২ | সময়: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ