সর্বশেষ সংবাদ :

আবারও অধিনায়ক হয়ে সাকিবের ফেরা, গন্তব্য সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ

স্পোর্টস ডেস্ক: সেদিন ঢাকায় ম্যাচ ছিল লিওনেল মেসির। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের পদচারণায় মুখরিত ছিল। মেসির পাঁড় ভক্ত ও তাকে নিয়ে চাঁদে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করা সাকিব আল হাসান ম্যাচটা দেখতে পারেননি। কেন না ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বরের ওই দিনটিতে তাকে প্রথমবার অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আজ ২ জুন ২০২২, ১১ বছরের মধ্যে সাকিব তৃতীয় মেয়াদে পেলেন টেস্ট অধিনায়কত্ব। মাঝে ২০১৮ সালে তার কাঁধেই নেতৃত্ব দিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় এক বছর পরই তাকে সরে যেতে হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর এলেই অধিনায়ক সাকিব! একবার নয়, দুইবার নয়; তিন তিনবার ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সফরে তার নেতৃত্বে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মুমিনুল দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে বিসিবি তা গ্রহণ করেছে। দুদিনের ব্যবধানে পুনরায় অধিনায়কত্বের হট সিটে সাকিবকে বসিয়েছে বিসিবি।
এনিয়ে তৃতীয়বার সাকিব অধিনায়ক হলেন। আগের দুবারই তার মিশন শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিয়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ জুন অ্যান্টিগা টেস্টে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব শুরু করতে যাচ্ছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিবের নেতৃত্ব পাওয়া ছিল পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত। মাশরাফি বিন মুর্তজার কাঁধে তখন টেস্ট নেতৃত্ব, সাকিব তার ডেপুটি। কিংসটাউনে সফরের প্রথম ম্যাচ খেলতে গিয়ে মাশরাফি পায়ের চোটে ছিটকে যান। এরপর সাকিব দলের দায়িত্ব নেন। প্রথম সিরিজেই বাজিমাত। ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। দলকে জেতাতে বড় ভূমিকা রেখে সাকিব ম্যান অব সিরিজও নির্বাচিত হন।
এরপর আরও ৮ টেস্টে সাকিব বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেও দল খুব একটা ভালো করেনি। তার নিজের পারফরম্যান্স আলোচনায় থাকলেও দলগত পারফরম্যান্স ছিল হতশ্রী। ২০১১ সালের অক্টোবরে জিম্বাবুয়ে সফরে ভরাডুবির পর তার অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল তার মেয়াদ। ওই সফরে পর্যবেক্ষক হিসেবে যাওয়া তৎকালীন বোর্ড পরিচালক শফিকুর রহমান মুন্না, স্টুয়ার্ট ল এবং ম্যানেজার তানজিব আহসান সাদের প্রতিবেদন পর্যালোচনার পর ৬ সেপ্টেম্বর তাকে নেতৃত্বের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বোর্ড। সে সময়ে পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছিল- শৃঙ্খলাভঙ্গ, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সাকিবকে নেতৃত্বে রাখেনি বোর্ড।
২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মুশফিককে সরিয়ে সাকিবকে আবারও অধিনায়ক করে বোর্ড। সেই সময়ে মুশফিকের অধীনে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দলকে হারালেও আরও বেশি প্রত্যাশা করতে থাকে বিসিবি। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে মুশফিকের পারফরম্যান্সে তারা সন্তুষ্ট ছিল না। একই সঙ্গে দল নিয়ে তার বক্তব্য বিসিবি পছন্দ করেনি। এজন্য তাকে সরিয়ে আবারও সাকিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু সাকিব বেশিদিন এই দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারেননি। ৫ টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার পর তিনি ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করায় ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়ে যান অপ্রস্তুত মুমিনুল হক। ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালে মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কিন্তু দল পরিচালনা করতে না পারা এবং ব্যাটিংয়ে চাপ বাড়ায় মুমিনুল দায়িত্ব ছাড়ার কথা বলেন। শেষমেশ সাকিবকেই আবার বেছে নিলো বিসিবি। এবারও তার মিশন শুরু হচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে। সব মিলিয়ে ৩৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে ১৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ, জয় মাত্র ৩টি আর হার ১১ ম্যাচ। টেস্ট অধিনায়কত্বের তৃতীয় সফর কেমন যাবে সাকিবের?


প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২২ | সময়: ৫:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ