মাদকের বিকল্প যৌন উত্তেজকে আসক্তি

মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর: জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে মাদকের বিকল্প হিসাবে যৌন উত্তেজক ঔষধ ব্যবহার করা হচ্ছে। যত্রতত্র বিভিন্ন নামীয় অনুমোদনবিহীন মানহীন যৌন উত্তেজক ঔষধের খালি বোতল চোখে পড়ে প্রত্যেকেরই। কিশোর থেকে বৃদ্ধ সকলেই ঝুঁকছে এসকল যৌন উত্তেজক ঔষধের দিকে। নেশার বিকল্প হিসেবে সেবন করা হচ্ছে এসব ঔষধ। এ ধরণের ঔষধ সেবনে স্থায়ীভাবে যৌন অক্ষমতা, কিডনি বিকল, হৃদরোগ, মানসিক চাপ, হতাশা সহ নানা রোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সচেতন মহল মনে করছেন, দামে কম ও সহজলভ্য হওয়ায় বেড়েছে এসকল ঔষধের ব্যবহার। এতে ঘটতে পারে সামাজিক অবক্ষয়। এধরণের ঔষধের উপর প্রশাসনের নিয়মিত তদারকির প্রয়োজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রামের ছোট মুদিখানার দোকান থেকে শুরু করে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ফার্মেসী, মুদিদোকানসহ প্রায় প্রতিটি দোকানেই হাত বাড়ালেই মেলে এধরণের অনুমোদনহীন যৌন উত্তেজক ঔষধ। দামে কম ও সহজলভ্য হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে বিক্রিয় হয় এই ধরণের ঔষধ। এধরণের ঔষধের ক্রেতা কিশোর বয়সী শিক্ষার্থী, প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক থেকে বৃদ্ধরাও।
এধরণের ঔষধ নিয়মিত সেবনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘এটি সেবনের পর মাথা ঝিমঝিম করে। সব কাজ করতে ভাল লাগে। নেশা করার মত ফিলিংস বা আবেশ তৈরী হয়। তাছাড়া এগলো সব জায়গাতেই পাওয়া যায়’।
আক্কেলপুর কলেজ বাজারের ভাঙ্গারি ব্যাবসায়ী আলম শেখ বলেন, ‘তার দোকানে সপ্তাহে এধরণের ঔষধের প্রায় ৫-৭ কেজি খালি প্লাস্টিকের বোতল বিভিন্ন ফেরিওয়ালারা বিক্রি করে যায়। যার আনুমানিক সংখ্যা ৩৫০ থেকে ৪’শ টি বোতল’।
আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল আমিন সরকার বলেন,‘এ ধরণের ঔষধে প্রচুর পরিমাণে মার্কারি ও স্টেরয়েড (পারদ) থাকে, যা সাময়িকভাবে উত্তেজনা বাড়ায়। নিয়মিত এ ধরণের ঔষধ সেবনে স্থায়ীভাবে যৌন অক্ষমতা, কিডনি বিকল, হৃদরোগ, মানসিক চাপ, হতাশা সহ নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করতে পারে’।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর জয়পুরহাট আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যৌন উত্তেজক ঔষধ শুধু নয় বিভিন্ন ব্যাথানাশক ট্যাবলেটও মাদকের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। এসব ঔষধে তালিকা ভুক্ত মাদকের উপাদান উপস্থিতি থাকলেই ঔষধ প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ফার্মেসি মালিক এবং ঔষধ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে সেমিনার করা হয়। তবে এসব ঔষধের বিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যহত আছে’।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২ | সময়: ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ