নওগাঁয় মালিকানা জমি দখল করে আ’লীগের অফিস নির্মাণে অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বাসস্টান্ড এলাকায় মঞ্জুর কাদের নামের এক ব্যক্তির ৩ শতক জমি দখল করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মানের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার দুপুরে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে মঞ্জুর কাদের ও তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মঞ্জুর কাদের বলেন, মহাদেবপুর উপজেলার সদরের বাসস্টান্ড এলাকায় বুলবুল সিনেমা হলের কাছে নওগাঁ-নজিপুর মহাসড়কের পাশে মঞ্জুর কাদের ও তাঁর ছোট ভাই রেজাউল পৈত্রিক সূত্রে ৩ শতক মালিক হন। পরে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ওই জমি ছোট ভাইয়ের অংশ বিনিময় করে নিলে ৩ শতক জমি তিনি প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন।
২০১২ সালে স্থানীয় আফজাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি ওই জমির জাল-জালিয়াতি করে আম মোক্তারনামা (পাওয়ার অব এ্যাটর্নি) করে নেন। এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে তিনি বাদী হয়ে নওগাঁ জজ কোর্টে একটি মামলা করেন। মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে এবং আদালতের নির্দেশে ওই জমি তিনি ভাগদখল করে আসছিলেন।
কিন্তু গত শুক্রবার হঠাৎ করে আওয়ামী লীগ নেতা বাবু ঘোষ ও সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল লোকজন নিয়ে গিয়ে জোর তাঁর জায়গায় নির্মিত টিন শেডের দোকানঘর ও ভাড়াটিয়া উচ্ছেদ করে জমিটি দখল করে নেন। স্থানীয় সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদারের সহযোগিতায় ওই জমি দখল করে সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের জন্য নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে থানা র্কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে নানা ধরনের তালবাহানা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মঞ্জুর কাদেরের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার রোগে ভুগতেছি।
মহাদেবপুরে বুলবুল সিনেমার পাশের ওই জমিতে দোকানঘর ভাড়া দিয়ে আমার চিকিৎসা ও সংসারের চলে। এখন ওই জায়গাটি চলে গেলে আমাদের বাঁচার কোনো পথ থাকবে না। জমিটি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সম্পাদক বাবু ঘোষ বলেন, যে জমি নিয়ে বিতর্ক উঠেছি সেই জমিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে কেনা। মঞ্জুর কাদের জমিটি আফজাল নামের এক ব্যক্তিকে আম মোক্তারনামা করে দেন। আফজাল আম মোক্তারনামার বলে জমিটি তার স্ত্রী সালমা আক্তারকে লিখে দেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সালমা আক্তারের কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। বৈধ কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জমিটি দখলে নেওয়া হয়েছে।
সালমা আক্তারের জমিটি বুঝে নেওয়ার দিন উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এখানে শুধু আমার নামে কেন অভিযোগ করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মহাদেবপুর-বদলগাছী আসনের সাংসদ ছলিম উদ্দিন তরফদার বলেন, ‘দখল করার যে অভিযোগ করা হচ্ছে এটা ভিত্তিহীন। বৈধ কাগজপত্রের ভিত্তিতে জমিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে কেনা হয়েছে। ওই স্থানে উপজেলা আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২ | সময়: ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ