কালচারাল অফিসারদের নিয়ে সংকট কাটছে না

আট জন কালচারাল অফিসারকে গত জুন মাসে জেলায় বদলির আদেশ দেওয়ার পর থেকে একাধিকবার তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে নির্দেশ দেওয়া হলেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। বরং এ নিয়ে আট কর্মকর্তার করা রিট হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় থাকায় এখনই বদলির আদেশ মানতে রাজি নন তারা। যদিও তাদের বদলির বিষয়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন আট জন কালচারাল অফিসারকে জেলায় বদলির আদেশ দেয় মন্ত্রণালয়।  ‘স্বায়ত্তশাসিত কোনও প্রতিষ্ঠানে মন্ত্রণালয় থেকে বদলির আদেশ দিতে পারে না’, দাবি করে ওই আট কর্মকর্তার পক্ষে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন আইনজীবী আবদুলমতিন সরকার। এদিকে মন্ত্রণালয়ের বদলির আদেশ উপেক্ষা করে গত ৩০ জুন আট কর্মকর্তাকে নিজ নিজ পদে বহাল থাকার পাল্টা আদেশ দেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। বদলির ঘটনায় শিল্পকলা একাডেমির প্রধান লিয়াকত আলী লাকী  মনে করেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অপরদিকে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন একাডেমির পরিচালনা পরিষদের একাধিক সদস্য। তারা বলছেন, পরিষদ সভার সিদ্ধান্তই মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে। উচ্চ আদালতে রিটকারীদের আইনজীবী আব্দুল মতিন সরকার বলেন, ‘বর্তমানে ফাইনাল হেয়ারিংয়ের জন্য বিষয়টি হাইকোর্টে পেন্ডিং আছে।’ এরই মধ্যে  পরিষদ থেকে  তাদেরকে আবারও নিজ নিজ এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানানো হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টা সমাধান হওয়া জরুরি।’ তাদের বদলিকৃত স্থানে যোগদানের ওপর কোনও স্থগিতাদেশ নেওয়া আছে কিনা, জানতে চাইলে  এই আইনজীবী বলেন, ‘তেমন কোনও আদেশ নেই। তবে যেহেতু ফাইনাল হেয়ারিংয়ের জন্য আছে, সেটা হওয়া দরকার।’এদিকে গত মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) প্রবিধানমালা সংশোধন, পদোন্নতি, শূণ্য পদে নিয়োগসহ নানা দাবিতে একাডেমি প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ। ক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা পরের দিন  বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণাও দেন। সূত্র জানায়, এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন কয়েকজন কালচারাল অফিসার,যাদের নিজ নিজ পোস্টিং অনুযায়ী জেলা শহরে থাকার কথা। তবে কর্মবিরতির ঘোষণা দিলেও পরে আর সেই কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়নি। জেলা কালচারাল অফিসার আসফ উদৌলার সঙ্গে বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি আর হয়নি।’ আরেকজন জেলা কালচারাল অফিসার হাসান মাহমুদ, যিনি বর্তমানে একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি বলেন, ‘এরকম কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই দিন মহাপরিচালকের হস্তক্ষেপে সুরাহা হয়।’ তিনি জানান, মহাপরিচালক তাদেরকে দাবিদাওয়া লিখিতভাবে জমা দিতে বলেছেন। তবে তারা পরে সেটিও করেননি। জেলা কালচারাল অফিসাররা যার যার বদলি হওয়া জেলায় ফিরে গেছেন কিনা, প্রশ্নে হাসান মাহমুদ  বলেন, ‘সর্বশেষ পরিষদের যে সভায় আবারও এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শোনা গেছে, সেটির রেজুলেশনই এখনও আসেনি। তারা চলে যাওয়া মানে তো আমারও যাওয়া। আবার বিষয়টি হাইকোর্টেও বিচারাধীন।’ যদিও তাদের বদলি হওয়া জেলায় যোগদানের কোনও স্থগিতাদেশ নেই। তাদের আইনজীবী একথা জানালেও হাসান মাহমুদ বারবার শুনানির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের ব্যাপারে জোর দেন।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২২ | সময়: ৫:২৮ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ