সর্বশেষ সংবাদ :

মুরাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

সানশাইন ডেস্ক: অডিও কেলেঙ্কারিতে প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা করতে ঢাকার শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ কর্মী। তার অভিযোগ, মুরাদ হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘তাচ্ছিল্য’ এবং রোকেয়া ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করেছেন। তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীদের ‘মানহানি’ হয়েছে।
অভিযোগকারী জুলিয়াস সিজার তালুকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সাবেক জিএস। ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবেই তিনি নির্বাচনে জিতে জিএস হয়েছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় গিয়ে তিনি ওই মামলার আবেদন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হারুন অর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” মামলার আবেদনে জুলিয়াস সিজার বলেছেন, ‘নাহিদরেইনস পিকচার্স’ নামের একটি ফেইসবুক পেইজে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের একটি ‘বিকৃত ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ তিনি দেখেছেন।
“এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে সে দেশের সর্ব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করেছে।” ওই ভিডিওতে রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের ‘চরিত্র হননের অপচেষ্টা’ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন জুলিয়াস সিজার।
তিনি বলেছেন, “আমরা মনে করি, যেকোন বিদ্যাপীঠই পবিত্র স্থান এবং একজন নাগরিকের চারিত্রিক বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে একটি সীমারেখা রক্ষা করা সকল নাগরিকের দায়িত্ব। উক্ত দুটো মন্তব্যের মাধ্যমে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং বিদ্যাপীঠসমূহের প্রতি তীব্র অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘৃণার রাজনীতি করার অপপ্রয়াস দেখিয়েছেন।
“অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারমূলক বক্তব্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা করে নারীর রাজনীতি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের বিরোধিতা প্রকাশ করেন।” সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনিকে নিয়ে ‘নারীবিদ্বেষী’ মন্তব্য করে সম্প্রতি বিএনপি নেতাদের সমালোচনায় পড়েন মুরাদ হাসান।
এরপর একটি টেলিফোন আলাপের অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলতে এবং হুমকি দিতে শোনা যায় এক ব্যক্তিকে। বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি মুরাদ হাসান। এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই সোমবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মুরাদকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন মুরাদ হাসান। বিকালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এদিকে, সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে। সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে পদত্যাগপত্রটি জমা দেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার বেলা ৩টায় পদত্যাগপত্রটি কেবিনেটে জমা দেওয়া হয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় তাকে আজ মঙ্গলবারের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর পদত্যাগ করলেন তিনি।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২১ | সময়: ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ