চারঘাটে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের হিড়িক

মিজানুর রহমান, চারঘাট: সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে রাজশাহীর চারঘাটে চলছে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন। পুকুর খননকারী ব্যাক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেও কোন সুফল পাচ্ছেন না। ফলে অনেকটা নির্বিগ্নেই চলছে পুকুর খননের মহোৎসব।
অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দিন রাত সমান তালে চলছে পুকুর খননের কাজ। তবে স্থানীয় প্রশাসনের দাবী পুকুর খননের খবর ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। তার পরেও প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে কেউ অবৈধ কর্মকান্ড চালালে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খনন করছে এক শ্রেণীর অস্বাধু ব্যাক্তিরা। অতি মুনাফা লোভী ব্যাক্তিদের এমন কর্মকান্ডে পরিবেশের উপর চরম ঝুকি রয়েছে বলে মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।
উপজেলার নিমপাড়া, ভায়ালক্ষিপুর,শলুয়া ও ইউসুফপুর ইউনিয়নে বেশ কিছু জমি লিজ নিয়ে একটি সংঘবদ্ধদল গত কয়েক মাস ধরেই ধানী জমিতে পুকুর খনন করলেও রহস্য জনক কারনে বন্ধ হয়নি পুকুর খনন। ফলে এসব এলাকায় এখন ধানী জমি নেই বললেই চলে। যেটুকু জমি পুকুরের বাইরে আছে সেটুকুও এখন জ্বলাবদ্ধতার কবলে পড়ে অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকে বছরের পর বছর।
তবে বর্তমানে ওইসব এলাকায় এখন পুকুর খননের জমি না থাকায় পুকুর খননকারী দানবরা পার্শ্ববর্তী সরদহ ইউনিয়নের সাদীপুর, শলুয়া ইউনিয়নের জাফরপুর ও ইউসুফপুর ইউনিয়নের জয়পুর মাঠে সমতল ধানী জমি কেটে পুকুর খনন করছেন ওই এলাকার প্রভাবশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট। আর এসব পুকুর খনন করে মাটি বিক্রির জন্য যে রাস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে সেব রাস্তা ভেঙ্গে চুরমার হচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ছে রাস্তাগুলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, গত দুইবছর আগে চারঘাট-বাঘার সাংসদ বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কাচা রাস্তাকে বানিয়েছেন পাকা। সেই পাকা রাস্তা শুধু মাটি খেকোদের মাটি বহনের জন্য রাস্তা গুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ এখন আর ওই রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না।
ইউসুফপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য রিংকু বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে হলে সরকারী অনুমতি প্রয়োজন। তাছাড়া সমতল ধানী জমি এভাবে কেটে পুকুর খনন সম্পুর্ন রুপে নিষিদ্ধ হলেও একটি সিন্ডিকেট সমতল জমিতে পুকুর খনন করছেন। এতে করে পুকুর খননকারীরা লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে পরিবেশ ও আশের পাশের জমির মালিকদের।
তাছাড়া কয়েক বছর আগে বানানো রাস্তা গুলো অধিক ভারের কারনে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। সরকার সাধার মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা বানালেও কিছু অসাধু ব্যাক্তিদের ব্যাক্তি স্বার্থের কাছে সরকারের কোটি কোটি টাকা আজ নষ্ট হতে বসেছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। ফলে দিনের পর দিন এভাবে চলছে অবৈধ পুকুর খনন।
মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জমির শ্রেণী পরির্বতন করে পুকুর খনন সম্পুর্ন রুপে নিষিদ্ধ। তবে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ পুকুর খনন কাজ করলে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, অবৈধ পুবুর খনন কোন ভাবেই কাম্য নয়। তারপরও যে সব এলাকায় পুকুর খননের খবর পাওয়া যাচ্ছে সেসব এলাকায় ইতিমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে ভাম্যমান আদালতের জরিমানাও করা হয়েছে। আমার উপজেলায় কাউকে কোন ধরণের অবৈধ কর্মকান্ড করতে দেয়া হবে না। তারপরও কোন তথ্য পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১২, ২০২২ | সময়: ৫:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর