বসতবাড়ি-বাগান অধিগ্রহণ না করার আকুতি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার

স্টাফ রিপোর্টার: নিজের বসতবাড়ি, পুকুর আর আমবাগান অধিগ্রহণ না করার আকুতি জানিয়ে রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা। বুধবার সকালে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শামসুল আরেফিন নামের এই ব্যক্তি।
রাজশাহীর পবা উপজেলার মুসরইল মৌজায় শামসুল আরেফিনের ২২৩ দশমিক ৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। শামসুল আরেফিন জানিয়েছেন, এই জমিতে তার বাড়ি, পুকুর ও বাগান রয়েছে। এছাড়া আছে একটি গবাদিপশুর খামার। অবসর জীবনে এগুলোই তার জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন। এখন কবরস্থান করার জন্য সব জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছে জেলা প্রশাসন। এতে শামসুল আরেফিন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুল আরেফিন বলেন, তিনি জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে ওই জমিটা কেনেন। ব্যাংক থেকে ঋণও নিতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। অবসরের পর সেখানে বাড়ি করেছেন। পাশাপাশি সেখানে গবাদি পশুর খামার আর পুকুর খনন করে মাছ চাষ করেন। বাগানে ৪৮০টি আমগাছও আছে। এ থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে তিনি অবসরের পর জীবিকা নির্বাহ করছেন। সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছেন। কিন্তু সম্প্রতি এই জমিতে কবরস্থান করার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি করলে তার আয়-রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়বে। সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।
শামসুল আরেফিন বলেন, ২০২২ সালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করেছে ৩৩ কোটি টাকা। এখন কবরস্থান করার জন্য তাকে কাঠাপ্রতি ৫০ লাখ টাকা দিতে চাওয়া হচ্ছে। এ জন্য তাকে নোটিশও পাঠানো হয়েছে। বলেন, ‘শহরে পর্যাপ্ত কবরস্থান রয়েছে। নতুন কবরস্থানের আর দরকার নেই। অন্যদিকে বসতবাড়ি পাওয়া আমার নাগরিক অধিকার। তাছাড়া কৃষিজমি অধিগ্রহণ না করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে। ভূমি আইনও এটি সমর্থন করে না।’ তাই শামসুল আরেফিন তার এই জমি অধিগ্রহণ না করার অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সহকারী কমিশনার শাম্মী আক্তার বলেন, ‘শামসুল আরেফিনের জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ করা হয়েছিল। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি আপত্তি জানিয়ে আবেদন করেছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কার্যালয়ে এ নিয়ে শুনানিও হয়েছে। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক স্যার এখনও মতামত দেননি। তিনি মতামত দেওয়ার পর এটি অনুমোদনের জন্য বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তারপর এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হতে পারে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০২৪ | সময়: ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ