পবায় ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় নষ্ট কৃষকের স্বপ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর পবার নওহাটা পৌর এলাকার পালোপাড়া গ্রামের বিলে ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় অনেক আবাদি জমির ফসল পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নওহাটা গ্রীণ ব্রিকস লিমিটেডের এই ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় কারণে এই কৃষকদের এই ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুড়ে যাওয়া ফসল পরিদর্শন করেছেন পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। এছাড়াও এই ব্রিকস সরিয়ে নিতে ও ফসলের ক্ষতির দাবীতে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক।
উপজেলার পালোপাড়ায় নওহাটা গ্রীণ ব্রিকস লিমিটেডের নামের এই ইটভাটায় ইট পোড়ানোর সময় ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে প্রবাহিত হওয়ায় কৃষকের অনেক আবাদি জমির ধান, পটল, বেগুন, পুইশাক, কলা, পেয়ারা ও আমবাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আবাদি জমির ফসলের ক্ষতিপূরণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে পুড়ে যাওয়া ফসল পরিদর্শন করেছেন পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। এ সময় তার সাথে ছিলেন, পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসনিম, পবা থানা অফিসার্স ইনচার্জ মোবারক পারভেজ, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর পারভেজ। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
স্থানীয় কৃষক বলেন, আমাদের আবাদি জমির পাশে ইট ভাটার কারণে বরাবরই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবারে আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধান করেছি। কিন্তু ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে আমার সব ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধান গাছের আগা থেকে পুড়তে পুড়তে এখন গাছই মরে যাচ্ছে। এছাড়াও আমাদের এলাকার কলা, লাউ, পুইশাক, আম বাগানসহ সকল ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী অন্য এক কৃষক বলেন, আমি জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করেছি। আবাদ প্রায় পুড়ে গেছে। এখন আমি কি করব! আমার স্বপ্ন খেতেই পুড়ে গেল। শুধু আমি নই এই এলাকার কৃষকের স্বপ্নের ফসল এই ভাটার গ্যাসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকের দাবি দ্রুত পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ ও পরবর্তীতে এমনটা যেন আর না ঘটে তার স্থায়ী সমাধান করা হোক এবং যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কৃষকদের দিয়ে দেওয়া হোক এমনটি মনে করেন ভুক্তভোগী কৃষক।
এ নিয়ে পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসনিম বলেন, ইটের ভাটার কোন কারিগরি ত্রুটির করণে এমনটি হতে পারে। কারণ আরও অটো ব্রিক ফিল্ড আছে, সেগুলোর এমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়েছে ১৬ বিঘা। অভিযোগের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে ক্ষতিগ্রস্থদের ৩৭ জনের তালিকা করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের পাশে আছি।
এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ‘ইট ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এই বিষয়ে কৃষকদের পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করা হবে। উপজেলা কৃষি অফিস, পিআইও, সংশ্লিষ্ট নওহাটা পৌরসভার কাউন্সিলর মিলে ৩৭ জন ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করা হয়েছে। ভাটাটি অবৈধ হলে ঐ ইট ভাটার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ | সময়: ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ