নওগাঁ জেলা পরিষদ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁ জেলা পরিষদের সদস্য জাকির হোসেনকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর নামে জেলা পরিষদের একজন ঠিকাদারসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেন ওই সদস্য। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলে রাব্বীর নির্দেশে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সান বিন আহসান বলেন, গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে জেলা পরিষদের সদস্য জাকির হোসেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর নামে একজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে জেলা পরিষদের মাসিক সভা ছিলো। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফজলে রাব্বীর সভাপতিত্বে দুপুরে সোয়া ১২টার দিকে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সভা শুরু হয়।
সভায় জেলা পরিষদের ১০ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হোসেন, ৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য জাকিয়া সুলতানা, ৭ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম নূরানীসহ অন্য সদস্যদের সঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কথা কাটাকাটি হয়।
এসময় তিনি উপস্থিত সকল সদস্যদের সামনে মোবাইল ফোনে আসামিদের জেলা পরিষদে আসতে বলেন। দুপুর ১টার দিকে জাকির হোসেন সভাকক্ষ থেকে বের হলে জেলা পরিষদের করিডরে ঠিকাদার জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ৫-৬ জন ব্যক্তি তাঁকে মারধর করেন। আত্মরক্ষার্থে জাকির চিৎকার করতে থাকলে অন্য সদস্যরা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
জাকির হোসেনের অভিযোগ, ‘হামলার ঘটনায় তৎক্ষণাৎ আমরা সদস্যরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দাবি করলে তিনি উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে সভাকক্ষ থেকে বের করে দেন। আমিসহ জেলা পরিষদের সকল সদস্যের দৃঢ় বিশ^াস, জেলা পরিষদের চেয়াম্যান ফজলে রাব্বীর নির্দেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার সঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে আশা করি, তাঁকেও আইনের আওতায় আনা হবে। ’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জেলা পরিষদের সদস্য জাকির হোসেনকে মারধরের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উল্টো জাকির হোসেনই লোকজন ডেকে নিয়ে আমাকে লাঞ্চিত করেছেন। গতকাল জেলা পরিষদের গিয়েছিলাম আমার ঠিকাদারি লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখি, চিৎকার করে জেলা পরিষদের চেয়াম্যান সাহেবকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করছেন। আমি সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শ দিলে তিনি আমাকেও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে বহিরাগত ছেলেপেলে ডেকে নিয়ে আমাকে হেনস্থা করেন। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি তাঁকে মারতে যাইনি।’
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম ফজলে রাব্বী বলেন, ‘জেলা পরিষদ কার্যালয়ে মারামারি কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারপরেও মামলা হয়েছে, তদন্ত হোক। কার নির্দেশে কে কাকে মারধর করেছে এটা তদন্ত হলেই বের হয়ে আসবে। এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’


প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ