বাঘার উর্বর মাটিতে নতুন মাত্রা পাচ্ছে ফলের চাষ

নুরুজ্জামান, বাঘা: এক সময় যে সমস্ত ফল বাংলাদেশে পাওয়া যেত না, এখন সেসব ফল রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশের মাটি ও জলবায়ু ফল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী হওয়ায় বাঘার কতিপয় শিক্ষিত তরুণ যুবকরা কৃষিকে সমৃদ্ধশালী করতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন।
আমরা জানি, পুষ্টির চাহিদা পূরণে ফলের কোন বিকল্প নেই বললেই চলে। অতিথি আপ্যায়ন, রোগীর খাদ্যসহ ফলের রয়েছে বিবিধ ব্যবহার। ২০ বছর আগে আম আর কাঁঠাল ছিল এ দেশের প্রধান ফল। পরবর্তীতে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ দেশে ৫৬ প্রজাতির ফল চাষ হয়। তবে বর্তমানে এটি ৭২ এ দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন ফল গবেষকরা। এদিক থেকে ফলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহীর বাঘায় হরেক রকম বিদেশী ফলের চাষাবাদ হচ্ছে।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, রাজশাহীর ৯ টি উপজেলার মধ্যে আম এবং সবজি চাষে বাঘাকে প্রথম হিসেবে ধরা হয়। এ উপজেলার আম মাটিগুনে সুমিষ্ট হওয়ায় বিদেশে রপ্তানী হয়। এ উপজেলার বিস্তৃর্ণ পদ্মার চরাঞ্চল জুড়ে রয়েছে সবজি ভান্ডার। পাশা-পাশি এখানকার প্রধান অর্থকারি ফসল আম।
সম্প্রতি বাঘায় অনুষ্ঠিত কৃষি মেলায় একশ প্রজাতির আমের স্টল সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এদিক থেকে অন্যান্য ফলের হিসেব করতে গেলে যে সমস্ত ফল এক সময় বিদেশে পাওয়া যেতো, এখন সেসব ফল বাঘায় উৎপাদন হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাঘায় যে সমস্ত বিদেশী ফল চাষ হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে ড্রগন, মাল্টা, স্ট্রবেরি, কমলা, জাম্বুরা, খেজুর, আঙ্গুর, ক্যাপসিক্যাপ, চেরিলা, মিষ্টি তেঁতুল, সবেদা, থাই কুল, থাই পেঁপে ও পেয়ারা।
আপর দিকে আমের মধ্যে মল্লিকা, বোম্বাই, সুরমা, আম্রপালি, কাটিমন, তেজপুরি, মধুমতি, দুধসর, সেঁনরি, ব্যানানা, কলাবতি, বৌ-ভুলোনো, নন্দ্রাফ্রজ, রানীপছন্দ, বাঘা শাহী ইত্যার্দি ফল মানুষের কাছে নতুন হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে।
আর এসব বিদেশী ফল উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন উপজেলার শিক্ষিত তরুন যুবক আমিনুল ইসলাম রুমন, শফিকুল ইসলাম সানা, আতিকুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, শাহিন আলম, ইকবাল হোসেন ও আতাউর রহমানসহ আরো অনেকে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আমলে কৃষিতে ব্যপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। শাকসবজি, মিঠা পানির মাছ ও ফলমূল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দশটি দেশের মধ্যে স্থান অর্জন করে নিয়েছে। আমাদের রয়েছে ফলের সমৃদ্ধ ভান্ডার।
তিনি রাজশাহী অঞ্চলে ফল গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন সহ কিভাবে ফল সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।


প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ