সর্বশেষ সংবাদ :

নারী দলে নতুন নির্বাচক কমিটি, নতুন স্পিন কোচ

স্পোর্টস ডেস্ক: মঞ্জুরুল ইসলামকে সরানোর পর নারী ক্রিকেটের জন্য নতুন জাতীয় নির্বাচক কমিটি চূড়ান্ত করেছে বিসিবি। প্রথমবারের মতো নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্পিন কোচও। এছাড়া বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের জন্য নেওয়া হয়েছে নতুন কোচিং প্যানেল।
সাবেক দুই জাতীয় ক্রিকেটার সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ও সজল আহমেদ চৌধুরি এখন থেকে নারী জাতীয় দল বাছাইয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই কমিটি ঘোষণা করেন বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান শফিউল আলম চৌধুরি।
“আমরা নির্বাচক প্যানেলে সাজ্জাদ আহমেদ শিপন ভাইকে এনেছি, সজল আহমেদ চৌধুরিও আছেন। আপাতত এই দুইজন। পরে একজন হয়তো যুক্ত হবেন। কারণ আমাদের টুর্নামেন্টের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এক জায়গায় বসে বা একজনের পক্ষে এতগুলো টুর্নামেন্ট কাভার করা সম্ভব নয়।” “তাই আমরা এটি (নির্বাচকের সংখ্যা বাড়ানো) করতে যাচ্ছি। বয়সভিত্তিক, ইমার্জিং দল ও জাতীয় দল- সবগুলো খেলায় যেন আমাদের নির্বাচকরা মাঠে থাকতে পারেন, তারা সেটা দেখতে পারেন।”
সাজ্জাদ ১৯৯৫ সালে দুটি ওয়ানডে খেলেছেন বাংলাদেশের হয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন দীর্ঘদিন। অনেক দিন ধরেই তিনি ছেলেদের জুনিয়র নির্বাচক হিসেবে কাজ করে আসছেন। কিছুদিন ছিলেন ছেলেদের জাতীয় নির্বাচক কমিটিতেও। সজল চৌধুরি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বাদ পাননি। তবে নব্বইয়ের দশকে জাতীয় দলে খেলেছেন তিনি। একসময় দেশের সবচেয়ে গতিময় বোলারদের একজন মনে করা হতো তাকে।
নতুন নির্বাচক কমিটির পাশাপাশি নাহিদা আক্তার, ফাহিমা খাতুনদের নতুন স্পিন কোচের নামও জানান বিসিবির নারী ক্রিকেটের প্রধান। “আমাদের জাতীয় দলে (প্রধান কোচ) হাশান তিলকারাত্নে আছেন, সম্প্রতি আমরা শ্রীলঙ্কা থেকে স্পিন কোচ হিসেবে দিনুকাকে (দিনুকা হেতিয়ারাচ্চি) নিচ্ছি। তিনি ২-৪ দিনের মধ্যে যুক্ত হবেন।”
৪৬ বছর বয়সী দিনুকার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার স্রেফ এক ম্যাচের। ২০০১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলেন তিনি। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৩৪ ম্যাচে বাঁহাতি এই স্পিনারের শিকার ১ হাজার উইকেট। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দুইশর বেশি উইকেট তার।
স্পিন কোহ হিসেবে আসছের সাবেক লঙ্কান স্পিনার দিনুকা হেটিয়ারেচ্চি। জাতীয় দলের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক পর্যায়ের জন্যও নতুন কোচিং প্যানেল সাজাচ্ছে বিসিবি। “বয়সভিত্তিকের জন্য আমরা দীপু রায় চৌধুরি ও ওয়াহিদুল গনিকে নিয়েছি। দীপু রায় আগেও কাজ করেছেন৷ আরও ৩-৪ জন কোচকে এই প্যানেলে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে। যাতে তারা বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের দলগুলোকে ভবিষ্যতে একটা শক্তিশালী পাইপলাইন হিসেবে তৈরি করে দিতে পারেন।”
নারী ক্রিকেটের পরিসর বড় করার আভাস আগেই দিয়েছিলেন শফিউল আলম। এই ভাবনার পেছনে কারণ ও বর্তমান অবস্থাও তুলে ধরলেন তিনি। “বিগত কিছু দিনে আমরা প্রচুর টুর্নামেন্ট শুরু করেছি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, বিভাগীয় পর্যায়ে টুর্নামেন্ট… আমরা স্কুল ক্রিকেট শুরু করতে যাচ্ছি। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর আমাদের আক্ষেপ ছিল, আমরা লঙ্গার ভার্শনে যাচ্ছি না। এবার সেটা কেটেছে। চারটি (আসলে তিনটি) দল নিয়ে আমরা দুই দিনের ম্যাচের টুর্নামেন্ট (বিসিএল) শুরু করেছি। খুলনায় যেটা হলো। আগামী বছর বা পরবর্তীতে যেটা করব, সেখানে হয়তো দল বাড়তে পারে এবং টুর্নামেন্টের ব্যাপ্তিও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে।”
“এখন নারী ক্রিকেট আর আগের মতো এক-দুইটা টুর্নামেন্ট বা দুই-একটা সফরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের কার্যক্রম এখন কোনো অংশে কম নয়। আমাদের বিভিন্ন সময় (বিসিবির) গেম ডেভেলপমেন্ট থেকে লোকবল কর্জ নিতে হয়, অন্য জায়গা থেকে লোক এনে জোড়াতালি দিয়ে টুর্নামেন্টগুলো করতে হয়। র প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন সাহেবও বলেছেন, নারী বিভাগে যেন পূর্ণাঙ্গ কাঠামো হয় এবং লোকবল বাড়িয়ে নিজস্ব লোক দিয়ে তার যে প্রোগ্রামগুলো আছে, সেগুলো যেন এগিয়ে নিতে পারে। সেই কারণেই আমরা কিছু অদলবদল করেছি।”
মেয়েদের ক্রিকেটে এখন চলছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এর আগে গত মার্চে প্রথমবারের মতো মেয়েদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগও (বিসিএল) আয়োজন করেছে বিসিবি। এছাড়া জাতীয় ক্রিকেট লিগও আয়োজিত হয় নিয়মিত।


প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ | সময়: ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ