বাঘায় ৫০০ বছরের পুরাকীর্তির শিলাফলকে আঁকা হয়েছে আম

নুরুজ্জামান, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাঘা শাহী মসজিদ। এই মসজিদের শিলা লিপিতে আমের ছবির ঐতিহ্য বহন করছে। ১৫২৩-১২২৪ খিস্টাব্দে (হিজরি ৯৩০) হোসেন শাহ্র পূত্র নুসরাত শাহ শাহী মসজিদ নির্মাণ করেন। এই শাহী মসজিদে চুন-সুড়কি দিয়ে গাঁথা পোড়া ইটের শিলালিপিতে আমের টেরাকোটা অংকিত আছে। যা থেকে প্রমানিত হয় বাঘার আমের সুখ্যাতি প্রাচীন আমল থেকে স্বীকৃত।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর আম বাগানের মধ্যে বাঘা উপজেলায় ৮ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। উপজেলায় উল্লেখযোগ্য আমের মধ্যে গোপাল ভোগ, হিমসাগার, আম্রপালি, ল্যাংড়া, তোতাপরি, ফজলি ও আশ্বিনা-সহ হরেক রকম গুঠি এবং লক্ষন ভোগ বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য।
এরমধ্যে গত প্রায় ৭-৮ বছর ধরে স্থানীয় সাংসদ ও পররাষ্ট্র পতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় গোপাল ভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলী ও কয়েক প্রকার গুঠি আম রপ্তানী করা হচ্ছে-ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে, পর্তুগাল, ফ্রান্স, রাশিয়া, ফিলল্যান্ড, হংকং, ডেনমার্ক ও শ্রীলঙ্কা সহ ইতালিতে। ইতোমধ্যে ঢাকার একটি অভিযাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গুঠি আম (চরুসা) বিদেশে রপ্তানী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউলাহ্ সুলতান বলেন, মাটিগত কারণে বাঘার আম অনেক সুস্বাধু এবং উপজেলার প্রধান অর্থকারি ফসল। ২০১৬ সাল থেকে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহায়তায় বিদেশে হরেক রকম আম রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাঁর সহায়তায় গত মৌসুমে ৩৬ মেট্রিক টন আম বিদেশে পাঠানো হয়েছিল।
কৃষিবীদ কামরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমের শুরুতে গত ৪ মে ঢাকার মতিঝিলের আম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে হংকং ও ইতালিতে ৪৪০ কেজি আম রুপ্তানি করা হয়েছে।
এ মৌসুমে দেশের বাইরে ২ কোটি টাকার আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবছর আমের উৎপাদন অনেক ভালো। আমরা আশা করছি হেক্টরপ্রতি ১৩ দশমিক ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে।