সর্বশেষ সংবাদ :

আওয়ামী লীগই পারে নেতা তৈরি করে জাতিকে উপহার দিতে : লিটন

স্টাফ রিপোর্টার : বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় উত্তরবঙ্গের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এক আনন্দ মিছিল মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে এক আনন্দ মিছিল বের হয়। আনন্দ মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে জনসাধারণের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল এঁর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মো. সাহাবুদ্দিনকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রদান করায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রাজশাহী বিভাগের একজন সন্তান ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থী, যিনি জাতির প্রয়োজনে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে নিজের যোগ্যতা, মেধা, মনন, দক্ষতা, আদর্শ ও দেশপ্রেম প্রমাণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাবরণ পর্যন্ত করেছিলেন। তিনি ছাত্রলীগ করেছেন, যুবলীগ করেছেন, আওয়ামী লীগ করেছেন এবং পরবর্তীতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জীবনের প্রতিটি পদে পদে তিনি তাঁর দক্ষতা, যোগ্যতা ও সততার প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর যোগতা ও দক্ষতার জন্য আজকে দেশবাসী আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে তাঁকে পুরস্কৃত করেছেন।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আমরা কোন ইয়াজউদ্দিন বা ইয়েস উদ্দিন মার্কা কাউকে রাষ্ট্রপতি করি না। প্রধানমন্ত্রী দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন তাকে, যার নাম শোনামাত্র পুরো জাতি বলেছেন, এটি একটি চমৎকার সিলেকশন। দলীয় সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে ও গোপনীয়তার সঙ্গে সবকিছু বিবেচনা করে মো. সাহাবুদ্দিনকে চূড়ান্ত সিলেকশন দেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘তিনি যদি বেঁচে থাকেন তাহলে একটা সুন্দর, নিরপেক্ষ নির্বাচন তিনি দেখে যেতে চান।’ আজকের পত্রিকায় আপনারা এটি পাবেন। দায়িত্ব নেওয়ার আগেই যে কথাটি তিনি বলেছেন, তা থেকে কী মনে হয় না, তার মধ্যে কতটা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আছে। তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে বলেছেন, ‘আমি কোন দলের এখন আর নই, আমি পুরো রাষ্ট্রের, পুরো জাতির, সবার। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমি সবার রাষ্ট্রপতি।’ এটিই তো কথা, এটিই তো হওয়া দরকার। সেটি একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে এই রকম নেতা তৈরি করে জাতিকে উপহার দিতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপহার দিয়েছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে। আওয়ামী লীগই পারে জনগণের কল্যানে কাজ করতে। আজকে দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নের কাজ চলছে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপি বলছে, তারা আরো আন্দোলন করবে। তারা পদযাত্রা যেটি ঢাকায় করেছে, আগারগাঁও থেকে মিরপুর অথবা যাত্রাবাড়ী থেকে কিছুটা দূর। এই সব আন্দোলন করে তারা সরকারকে হুমকি দিতে চায়, সরকারকে ভয় দেখাতে চায়। গত শীতে দেখলাম, তারা বিভিন্ন জায়গায় শীতকালে পিকনিক ভালো জমে, সেই পিকনিক তারা করে বেড়ালো বিভিন্ন জায়গায়। চুলা জ্বালিয়ে, গরুর মাংস কেটে, খেচুড়ী, পোলাও, বিরিয়ানি বানিয়ে তারা খেয়েছে। মনে করলো, আওয়ামী লীগ বোধহয় ভয় পেলে পালিয়ে যাবে। তাদের কথা মতো ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে দেশ চলার কথা ছিল। আজকে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ। দুই মাসের বেশি সময় পার হয়ে গেল, কোথায় গেল বিএনপির সেই দম্ভোক্তি? সেই কারণে বলতে চায় আওয়ামী লীগকে এই সমস্ত কথা বলে লাভ নেই। এই সমস্ত হালকা কথা, এই সমস্ত খেলো কথা বানের জলের মতো অতীতে ভেসে গেছে, আগামীতেও যাবে।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এই বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। ইতিমধ্যে সাজসাজ বর। কে ছোট দল, কে আরেক দলকে ভেঙ্গে নিয়ে আসছে, নতুন করে দল সৃষ্টি হচ্ছে। নানা খেলা চলছে। নির্বাচনের বছরে এটা হতেই পারে। এতে কোন বাঁধা নেই। কিন্তু এইটা করতে গিয়ে চক্রান্ত করে দেশবাসীকে বিপদে ফেলবেন অথবা সরকারের বিপদে ফেলার চেষ্টা করবেন, এতো মুর্খের মতো কাজ করেন না। কাঁচের ঘরে বসে ঢিল মারতে আসবেন না। তাহলে আপনাদের ঘর আর থাকবে না, ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। বারবার কিন্তু ২০১৩/২০১৪ হবে না, আগুন সন্ত্রাস করতে দেয়া হবে না। যদি আবারো এই রকম কিছু হয় তাহলে কী করতে হবে আমরা নির্দেশ পেয়ে গেছি। এসব অপকর্ম জনগণকে সাথে নিয়ে তাৎক্ষনিক সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
রাসিক মেয়র বলেন, আমাদের সাথে শেখ হাসিনা আছেন, তাঁর সঙ্গে এসে মো. সাহাবুদ্দিন যুক্ত হলেন। তাঁরা থাকতে দেশ পথ হারাবে না বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ তাঁর নিজস্ব গতিতে জাতিকে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। প্রায় প্রত্যেক দিন টেলিভিশন খুললেই দেখা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করছেন। এই উন্নয়নের ধারা চলতে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগকে নিয়ে কোন কিছু ভেবে লাভ নেই। জনগণ যতদিন আমাদের সঙ্গে আছে, কেউ আমাদের সরাতে পারবে না ইনশাল্লাহ। আমরা নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি এবং আওয়ামী লীগ আরো অনেক দিন ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়ন করুক-এই প্রত্যাশা করছি।
সমাবেশে মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে দেশবাসীকে একটি চমক উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে দিয়ে আবারো প্রমান হলো যে, জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় সততা, মেধা, যোগ্যতার মূল্যায়ন করতে জানেন। এটিই তাঁর চমক। মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রের শীর্ষ পদে একজন সৎ, যোগ্য ও আদর্শবান মানুষ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ অলঙ্কৃত করলেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি তথাকথিত নগর পদযাত্রার কর্মসূচী দিয়েছেন। এই অশান্তির পদযাত্রার প্রতিবাদে আমরা নগরীতে শান্তির পদযাত্রা করবো জনগণকে সাথে নিয়ে, শান্তি সমাবেশ করবো। সেই শান্তি সমাবেশে সকলে উপস্থিত থেকে বিএনপি’র সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত রুখে দিবো।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করায় আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষ গর্বিত। ব্যক্তিগত ভাবে আমি নিজেও গর্বিত। কারণ আমরা দুজনেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তিনি আমার অগ্রজ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, শাহীন আকতার রেনী, রেজাউল ইসলাম বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, আহ্সানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ ডলার, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, আশরাফ উদ্দিন খান, আতিকুর রহমান কালু, হাফিজুর রহমান বাবু, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, আলিমুল হাসান সজল, ইউনুস আলী, মোখলেশুর রহমান কচি, মাসুদ আহমদ, আশীষ তরু দে সরকার অর্পণ, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ইপফাৎ আরা কামাল, মালিহা জামান মালা, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালমা রেজা, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, নগর তাঁতী লীগ সভাপতি আনিসুর রহমান আনার, সাধারণ সম্পাদক মোকসেদ-উল-আলম সুমন সহ নেতৃবৃন্দ।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩ | সময়: ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ