সর্বশেষ সংবাদ :

প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় জেলা আওয়ামী লীগ নেতার নামে থানায় জিডি

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মো. মনসুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি ও অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে। এমনকি সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে জেলা আওয়ামী লীগের ওই নেতার বিরুদ্ধে। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনার পর পুঠিয়া থানায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন পুঠিয়ার বিড়ালদহ সৈয়দ করম আলী (রহঃ) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুরবান আলী।

থানায় দায়ের হওয়া জিডি সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদ, মাহাতাব মুহুরি ও স্বপন সহ কয়েকজন বিদ্যালয়ে অনধিকার প্রবেশ করে বিদ্যালয়ে কমিটি গঠণ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কুরবান আলীকে হুমকী-ধামকী দেন। এমনকি প্রাণে মেরে ফেলার হুমকীও দেয়া হয়। পরে প্রধান শিক্ষক কুরবান আলীর মোবাইল ফোনে কল করে পুণরায় হুমকী দিয়ে বলে তাদের কথামতো বিদ্যালয় পরিচালনা না করলে ভবিষ্যতে চাকরী করা কঠিন হবে।

ঘটনার প মোবাইল ফোনে কল করে পুণরায় প্রধান শিক্ষক কুরবান আলীকে হুমকী দেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ। মোবাইল ফোনে কথোপকথন চলাকালীন স্থানীয় সাংসদ প্রফেসর ডা. মনসুর রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ কটুক্তি করে অশালীন ভাষায় বলেন, ‘মনসুর সাহেবের দিন শেষ, তার কথামতো এখন আর কোনো কিছুই হবেনা। আমরা এলাকার মানুষ। আমরা ভালোমন্দ বুঝি, আমরা যেভাবে বলবো সেভাবেই বিদ্যালয় পরিচালনা করতে হবে’।

এদিকে, প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইল ফোনে কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

সৈয়দ করম আলী (রহঃ) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুরবান আলী বলেন, করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন থেকে সেই কমিটি দিয়েই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে আজ (সোমবার) রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদ সহ স্থানীয় ১০ থেকে১৫ জন ব্যক্তি একটি লিখিত কাগজ নিয়ে বিদ্যালয়ে আসেন এবং আমাকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি তাতে স্বাক্ষর না দিতে চাইলে আব্দুস সামাদ আমার কলার ধরে টানাটানি করে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এছাড়া আমাকে মারার জন্য তারা তেড়ে আসলে আমি প্রাণভয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেটে আশ্রয় নিই। পরে আমি জাতীয় জরুরী সেবা হটলাইনে (৯৯৯) ফোন দিলে পুঠিয়া থানার পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সামাদের সাথে কথা বলা হলে তিনি হুমকী-ধামকীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, সৈয়দ করম আলী (রহঃ) উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন থেকে কোন কমিটি নেই। আজকে (সোমবার) শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কমিটি করার জন্য বললে উল্টো প্রধান শিক্ষক আমাদের উপরে চড়াও হন।

সাংসদ ডা. মনসুর রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করা হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগে নেতা আব্দুস সামাদ কোনাও মন্তব্য করেননি।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩ | সময়: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ | সানশাইন