নির্বাচনের আগে নতুন রাস্তা নয়, ডিসিদের কাদের

সানশাইন ডেস্ক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের কোথাও নতুন কোনো রাস্তা না করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিদ্যমান সড়কের মেরামত ও সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।
বুধবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ নির্দেশনার কথা জানান তিনি। সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা আনার জন্য কাজ করার পাশাপাশি সম্মেলনে তিনি তিন চাকার যানবাহনে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে যেন তা গরিব মানুষের জীবিকা অর্জনে বাধা না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন।
বিফ্রিংয়ে কাদের বলেন, “আমার মন্ত্রণালয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক অবকাঠামো পদ্মা, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, শত সেতু শত রাস্তা, ওভার পাস, ফ্লাইওভার সকল কর্মকাণ্ডে এগুলো দৃশ্যমান। এগুলো নিয়ে কথা বলে আমি সময় নষ্ট করতে চাইনি। এগুলো সবাই দেখেছে, দৃশ্যমান।
“আমি ডিসি সাহেবদের গুরুত্ব দিয়ে বলেছি, আমি এখন আর কোনো নতুন রাস্তা করতে চাই না। আগামী নির্বাচনের আগে যে রাস্তাগুলো বিদ্যমান আছে সে রাস্তাগুলো মেরামত করতে চাই। ব্যবহার যোগ্য করতে চাই। যেগুলো আছে সেগুলো মেরামত করা, সংরক্ষণ করা আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ।”
মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার ছোট বাহনের চলাচল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ছোট ছোট যানগুলো মোটরসাইকেল ঢাকা শহরে অনেক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি, তা ৯৫ শতাংশ। ঢাকায় চালক ও আরোহী দুই জনই হেলমেট ব্যবহার করছে। কিন্তু মফস্বলে তিনজন এক মোটরসাইকেলে, কারও মাথায় হেলমেট নাই। এসব বিষয়গুলো দেখার জন্য বলেছি।”
তিন চাকার বাহন চলাচলের বিষয়ে নীতিমালা তৈরিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিবকে নিদের্শনা দেওয়ার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, “গরীব মানুষের জীবন যেমন আছে, জীবিকাও আহরণ করতে হবে। তাদের জীবিকা চাকাটা আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। কাজে এইগুলোকে একটা নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
“এখন দায়িত্ব হল এসমস্ত যানগুলো শহরে এবং হাইওয়েতে যানজট সৃষ্টি করে, দুর্ঘটনায় দেখা যায় একটা ইজিবাইক দুর্ঘটনা হলে ১০/১২ জন মারা যায়। বড় দুঘটনাও এই পরিমাণে মারা যায় না। এখন দুর্ঘটনার হার কমে গেছে, দুর্ঘটনার মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন করিমনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”
সড়কে পরিবহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনা ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “অনেক রাস্তা হয়ছে, অনেক সেতু হয়েছে, শৃঙ্খলা না এলে এগুলো ম্লান হয়ে যাবে। সেজন্য আমি শৃঙ্খলার উপরে গুরুত্ব দিয়েছি। ডিসিদের বলেছি, শৃঙ্খলার বিষয়ে সহযোগিতা করতে এবং তারা করবেন।”
এ বছর নতুন আরও ৭০ কিলোমিটার রেললাইন চালু হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “লাকসাম থেকে আখাউড়া সেকশনে ১৭ কিলোমিটার ডাবল লাইন, টঙ্গী থেকে জয়দেবপুর থার্ড লাইনের ১১ কিলোমিটার এবং রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের সঙ্গে পাকশী পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটারসহ মোট ৭০ কিলোমিটার রেললাইন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।”
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ এ বছরের মধ্যেই চালুর পাশাপাশি খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত রেল লাইনের প্রকল্পটি এই বছরের জুন মাসের মধ্যে উদ্বোধন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সুজন বলেন, দেশের পুরো রেল ব্যবস্থাকে ব্রডগেজে পরিণত করা হবে। ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাবান্ধা থেকে শিলিগুড়ি এবং আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান তিনি।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ | সময়: ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ