সর্বশেষ সংবাদ :

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে রাজশাহীমুখি নেতারা : জনসভা লোকারণ্যের টার্গেট

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র জনসভা ঘিরে এখন রাজশাহীমুখি হতে শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। বিভাগীয় শহরে প্রতিদিন বাড়ছে নেতাদের চাপ। এছাড়া স্থানীয় নেতারা মাঠে ব্যাপক সোচ্চার হওয়ায় প্রতিদিনই উত্তাল থাকছে রাজশাহী। মিছিল-মাইকিং স্লোগানে রাজশাহী এখন রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। সবার টার্গেট আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর ঐতিহসিক মাদ্রাসা ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল জনসমুদ্রে পরিনত করা।
রাজশাহীর জনসভায় অন্তত ৯ থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম করার টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন নেতারা। একারণে রাজশাহী নগর ছাড়াও জেলা-উপজেলা, ওয়ার্ড ও বিভাগের প্রস্ত্যন্ত অঞ্চলে শুরু হয়েছে জোর প্রচারণা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিয়ে সায় মিলছে সাধারণ মানুষেরও। তারা এখন অধির আগহে অপেক্ষা করছেন আগামী ২৯ জানুয়ারির।
স্থানীয় নেতারা বলেছেন, এবারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা কোনো দাবি-দাওয়া জানাবেন না। এর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীকে কেবলই কৃতজ্ঞতা জানাবেন তারা। কারণ হিসেবে নেতারা বলছেন, আধুনিক রাজশাহী গড়ার নেপথ্যের নায়ক শেখ হাসিনা। বর্তমানে রাজশাহীতে তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়নকাজ চলছে। স্বাধীনতার পর এত বড় বরাদ্দ এখানে আসেনি। তাই জনসভায় তাকে ‘ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা’ জানানো হবে। শুধু রাজশাহী নগর নয়, উন্নয়নে পুরো উত্তরাঞ্চলের চেহাল পাল্টে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে নানাভাবে সাজানো হয়েছে রাজশাহী নগরী। জনসভা সফল করতে বিভাগজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দলীয় সভাপতির নজরে আসতে রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন, নিশান, তোরণ টানানোসহ নানা কর্মসূচি পালনে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। স্থানীয় নেতারা আগমনী শুভেচ্ছা বার্তার প্রচার চালাচ্ছেন। পথঘাট, অলিগলি, হাটবাজার ছেয়ে গেছে ব্যানার-ফেস্টুনে।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে পুরো রাজশাহী নগরী সাজিয়ে তোলার কাজ করছে সিটি করপোরেশন। বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারের কাজ চলছে জোরেশোরে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় চকচকে এই নগরীকে আরও উজ্জ্বল করে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের রাজশাহীকে বদলে দিতে সড়কে সড়কে বসানো হচ্ছে উন্নত এলইডি বাতি। একেকটি খাম্বায় রয়েছে ১৩টি করে বাতি। সাড়ে আট কোটি টাকা খরচে মধ্যনগরীর দুটি সড়কে কয়েক দিন ধরে এসব বাতি লাগানো হচ্ছে। তবে বাতি লাগানোর কাজটি নিয়মিত উন্নয়নকাজেরই অংশ বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম আসাদুজ্জামান সুইট। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সেই কাজ দ্রুত সম্পন্নের চেষ্টা চলছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘এটি কোনো গতানুগতিক জনসভা হবে না। এ জনসভার বিশেষ গুরুত্ব হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই হতে পারে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর শেষ সফর। তিনি রাজশাহীতে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচনের আগে আর আসতে পারবেন কিনা তা বলা যাচ্ছে না। তাই দলের সভাপতি হিসেবে তিনি নির্বাচন নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখতে পারেন। তার কাছে আমরা আর নতুন কোনো দাবি-দাওয়া তুলতে চাই না। তিনি গত ১৪ বছরে রাজশাহী অঞ্চলের জন্য যা দিয়েছেন, তাতে মানুষের আর চাওয়ার মতো তেমন কিছু আর নেই।
সরকার প্রধানের আগমন উপলক্ষে প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ব্যস্ত সময় পার করছে। এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। রাজশাহীজুড়ে নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফর সম্পন্ন করতে পুলিশ সদর দফতরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে। মাদ্রাসা মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়ে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে। বাড়ানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৩ | সময়: ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ