সর্বনিম্ন রেকর্ড তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে প্রতিদিনই ভাঙছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। গত আট দিনের ব্যবধানে রাজশাহীতে কমেছে সাড়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। রবিবার সকাল ৭টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু হয় ১৩ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস দিয়ে। ২ জানুয়ারি ১১ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ জানুয়ারি ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ জানুয়ারি ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ জানুয়ারি ১০ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ জানুয়ারি ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ জানুয়ারি ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও আজ ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত ৮ দিনে তাপমাত্রা কমেছে সাড়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। চলতি সপ্তাহে আরও কমতে পারে তাপমাত্রা। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত রাজশাহীতে শীতের তেমন তীব্রতা অনুভূত না হলেও গত ২ সপ্তাহ ধরে শীত বেড়েছে। সূর্যের দেখা মিললেও নেই তাপ। এ কারণে দিনভরই শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ কামাল উদ্দিন বলেন, রাজশাহীতে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। রবিবার চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবারও মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২৯ ডিসেম্বর ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশা কেটে যাবার করণেই শনিবার থেকে রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। যদিও তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। তবে কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ।
এদিকে হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন পরিস্থিতিতে বেকায়দায় পড়েছেন দিনমজুর, ভিক্ষুক, রিকশাচালকসহ নিম্নআয়ের মানুষ। তাই শীত থেকে বাঁচতে এসব মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে এখন রাস্তার পাশে ফুটপাতের দোকান। রবিবার সকালে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের ফুটপাতে উল্লেখসংখক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। শীতের কাপড় কেনায় ধুম পড়েছে।
ফুটপাতের দোকানিদের হাঁক-ডাকই জানান দিচ্ছিলো যে শীত নিবারণের জন্য সেখানে গরম কাপড় কমদামে বিক্রি হচ্ছে। তবে বরাবরের মত সাধারণ দোকানিদের বিরুদ্ধে ক্রেতাদের সেই একই অভিযোগ ‘দাম বেশি’। ফুটপাত ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে ঠাণ্ডা বেশি পড়ার কারণে আমাদের বেচাকেনা বেশ ভালো হচ্ছে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. বিল্লাল হোসেন জানান, শীতজনিত রোগীর সংখ্যা এখন ক্রমাগত বাড়ছে। কোল্ড ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগ নিয়ে মানুষ হাসপাতালে আসছেন বেশি। এজন্য ইনডোর ও আউটডোরে শীতজনিত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী শীতে রাজশাহীর কৃষিতে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। কুয়াশার কারণে বরাবরই বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে জমির বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দিয়েছে এবারও। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩ | সময়: ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ