সর্বশেষ সংবাদ :

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর

সানশাইন ডেস্ক : আজ ১২ ডিসেম্বর। ১৯৭১ একাত্তরের এই দিনে মুক্তির মাহেন্দ্রক্ষণটি কখন সমাগত হবে সেই অপেক্ষার প্রহর গুণছিল মুক্তিকামি বাঙালি জাতি। একদিকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বার-বার প্রচারিত হচ্ছিল মুক্তি বাহিনী আর মিত্র বাহিনীর জয় যাত্রার খবর, এর সাথে বিশ্বের অন্যান্য দেশের প্রচার মাধ্যমও বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের খবর প্রচার করছিল। এসব খবর শুনে বাঙালি জনগোষ্ঠী আনন্দে আত্মহারা হচ্ছিল। আবার অপরদিকে ছিল তাদের গভীর অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠা। কারন পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য আমেরিকার সপ্তম নৌবহর এবং পাকিস্তানের বন্ধুর রাষ্ট্র চীনের প্রত্যক্ষ সামরিক সহযোগিতার কথাও তখন ভাসছিল।
সে সময়ের মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার আগের দিন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়ার প্রতিনিধি ভোরেন্টসভকে হুঁশিয়ার করে বলেন, পরদিন (১২ ডিসেম্বর) মধ্যাহ্নের আগে ভারতকে অবশ্যই যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য করতে হবে। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র নিজেই প্রযয়োজনীয় সামরিক ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কিসিঞ্জার নিশ্চয়ই জানতেন, রণাঙ্গনে আসন্ন বিজয় দৃষ্টে ভারত এই চরমপত্র অগ্রাহ্য করবেই। কাজেই মার্কিন প্রশাসন ওই দিনই কোনো এক সময়ে তাদের আসন্ন হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত পাকিস্তানকে জানিয়ে দেয়, এদিন রাতে প্রাদেশিক সরকারের বেসামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী আলবদর ও আল-শামসের কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের ডেকে পাঠান সদর দপ্তরে। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় গোপন শলাপরামর্শ। এই বৈঠকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা প্রণয়ন করা হয়। রাও ফরমান আলী তাদের হাতে তুলে দেন বুদ্ধিজীবীসহ বিশেষ বিশেষ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের নামের তালিকা। বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে সেই রাতেই আলবদর বাহিনী সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফাকে তাদের বাসভবন থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তারা আর কখনো ফিরে আসেননি স্বজনদের কাছে। বাংলা মায়ের এ দু’ছাড়া আরও অনেকের সন্তানকে হানাদার বাহিনীর জিজ্ঞাসার শিকার হতে হয়।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২২ | সময়: ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ