বাগমারা, পুঠিয়া ও বাঘায় ৫ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে এলাকায় বিশৃংখলা সৃষ্টি ও সরকারের ভামূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব এ্যাড.মনিরুজ্জামান রঞ্জু।
বুধবার সকালে বাগমারা থানার পুলিশ দেউলা বাসট্যান্ড থেকে রঞ্জুকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চত করেছেন বাগমারা থানার ওসি রবিউল ইসলাম। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর বাগমারার বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বি¯েফারকদ্রব্য আইনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে।
ওই মামলায় ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামানসহ সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০জনকে আসামি করা হয়েছে। বাগমারা থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, ওই মামলায় এজাহার নামীয় আসামী হিসাবে বিএনপি নেতা মনিরুজ্জমান রঞ্জুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ দিকে রঞ্জু চেয়ারম্যানকে গ্রেফতারের পর বিএনপি’র অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা গাঢাকা দিয়েছে। গ্রেফতার আতংক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা উপজেলাব্যাপি।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ মুঠোফোনে বলেন, আগামি ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে নেতা-কর্মীরা যাতে না আসতে পারেন এবং তাঁদের হয়রানির জন্য গায়েবি মামলা করেছে। এরপরেও সমাবেশ সফল হবে বলে তিনি জানান। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, পুলিশ হয়রানি করার জন্য নয়, প্রকৃত ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা করেছে। এটা কোনো গায়েবি মামলা নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, রাজশাহীর বাঘায় বিস্ফোরক মামলায় দুই বিএনপি ও একজন যুবদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে বাঘা বাজার ও হাসপাতাল এলাকায় পৃথক-পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
বাঘা থানা পুলিশের একটি মুখপাত্র জানান, গত ১৯ নভেম্বর রাত ১০ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাঘা থানার পুলিশ জানতে পারেন উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কেশবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে নাশকতা করার পরিকল্পনা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি)সাজ্জাদ হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।
এ সময় পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল ও ককটেল মারতে শুরু করেন। তবে কিছুক্ষনের মধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পালটা ধাওয়া করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৪টি তাজা ককটেল ও শতাধিক বাশের লাঠি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে বাঘা থানায় একটি বিস্ফোরক মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বুধবার সকালে পৃথক-পৃথক অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। আটককৃতরা হলো বাঘা উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মকলেছুর রহমান মুকুল, মনিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা ফিরোজ আহাম্মেদ ও বাঘা পৌর যুবদলের নেতা শফিকুল ইসলাম শফি।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত ১৯ নভেম্বর রাত ১০ টার দিকে পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কেশবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে নাশকতা করার পরিকল্পনা করছির। এমন সংবাদ শুনে সেখানে পুলিশ পৌছালে তারা পুলিশকে লক্ষ করে ককটেল বিস্ফরণ করে পালিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে ৪ টি তাজা ককটেল ও শতাধিক বাশের লাঠি উদ্ধার করা হয়। এ মামলায় বুধবার সকালে তিনজনকে আটক করে দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
অপরদিকে, রাজশাহীর পুঠিয়ায় নাশকতার মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে আটক করেছে পুঠিয়া থানা পুলিশ। আটককৃতার হলেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক, অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম মুক্তা (৫০) ও পুঠিয়া পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল মিয়া (৫০)। বুধবার ভোরে তাদেরকে আটক করা হয়। গত ২১ নভেম্বর রাতে উপজেলার মোল্লাপাড়া বাজারে বিএনপির সমাবেশ স্থলে ককটেল বিস্ফোণের ঘটনা ঘটে।
উক্ত ককটের বিষ্ফোরণের ঘটনায় পুঠিযা উপজেলার বিএনপির ১৬ জন নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৮০ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
এসময় উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও বানেশ্বর সরকারি কলেজের সাবেক উপাধাক্ষ্য খোরশেদ আলমকে আটক করা হয়। পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়াদী হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নাশকতার মামলায় তাদেরকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকে চেষ্টা চলছে বলে এ কর্মকর্তা জানান ।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২ | সময়: ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ