সর্বশেষ সংবাদ :

বাগমারায় এতিমের সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী এবং নাবালক এতিমের সহায় সম্পত্তি কৌশলে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে, স্বজনদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভিকটিম সাথী বেগম গনিপুর ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের মৃত হোসেন আলীর পুত্রদ্বয় প্রভাবশালী ভাসুর মাসুদ রানা, দেবর জাহিদ হাসান, ননদের স্বামী চাঁনপাড়া গ্রামের আসাদের নামে রাজশাহী কোর্টে মামলা করায় অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অব্যাহত হুমকি-ধামকির মুখে ভিকটিমকে পিত্রালয়ে বসবাস করতে বাধ্য করা হয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যবসায়িক দলিল দস্তাবেজ , টাকা পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে। বাড়িতে হামলার চেষ্টা এমনকি ভিকটিম সাথী বেগম ও তাঁর শিশুপুত্রকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবেশী এনামুল হক দুলাল জানান, মৃত ব্যবসায়ী মাহাবুরের একটি ওয়েল্ডিং/ ওয়ার্কসপ, নগদ, ডাচবাংলা, বিকাশ অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবসা, একাধিক দোকান ঘর ছিল ।
মৃত মাহাবুরের ভাই- মাসুদ রানা, জাহিদ হাসান, স্বজন আসাদ কৌশলে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতিয়ে নিয়ে বিধাবা মেয়টিকে একেবারে অসহায় করেছেন। এনামুল হক তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন । সূত্র জানায়, দোকান, একাধিক অনলাইন ব্যাংকিং, লেদ ঘরে মজুদকৃত লোহা লক্কড় বিক্রয় করে প্রায় ২৫/৩০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এতিম শিশুর ভাগে ভাড়া দেয়া সেলুন ঘরটি দেয়া হয়। সাথী বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান, মুদি দোকানের মালামাল, ফ্লেক্সিলোড়, মোবাইল ব্যাংকিং, লেদ দোকানের সাথে, সেলুন ঘরের তুলনা হয় ? সাথি বেগম আরও জানান, বিবাদীরা প্রভাবশালী তাই তিনি সুবিচার থেকে পদে পদে বঞ্চিত হচ্ছেন।
গত বছর ৩০ নভেম্বর সকাল এগারো ঘটিকার দিকে দেবর, শাশুড়ি, ননদ সহ আরও কয়েকজন সংঘব্দ্ধ হয়ে সাথী বেগমকে মারার উদ্দেশ্যে বাড়িতে দরজা-জানালায় আঘাত করতে থাকেন। নিরুপায় হয়ে সাথী বেগম ৯৯৯ এ কল করেন । বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিবাদীরা সটকে পড়ে। বাগমারা থানা পুলিশ লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন । এ ঘটনায় ২০২১ সনের ৩০ নভেম্বর চারজনের নাম উল্লেখ করে বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া বাগমারা থানার একজন উপ-পরিদর্শককে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিবাদীগণের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। নারাজী আবেদন সূত্রে জানা যায়, মামলার আইও বিবাদীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সঠিক তদন্ত না করে, মিথ্যা প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন।
ভিকটিম সাথি বেগম সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুবিচার প্রার্থনা করেন। নাবালাক শিশুপুত্রকে একটি হাফিজিয়া মাদ্রসায় ভর্তি করিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অসহায় জীবনযাপন করছেন।
অভিযুক্ত মাসুদ রানার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি খেলার সময় উল্লেখ করে বলেন, পাঁচটার পরে কথা বললেন। একটু সময় চাইলে, দীর্ঘ আলাপচারিতায় জানান, আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মোবাইল ব্যাংকিংসহ অন্যান্য ব্যবসার মূলধন সমন্ধে বলেন, মাত্র বারো হাজার টাকা ছিল। বাকি উঠিয়ে ভাতিজার নামে লক্ষাধিক টাকার এফডিআর করে দেয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বাগমারা আমলী-২,আদালতের বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গত ০৩/১১/২০২২ খ্রি. তারিখ শুনানী শেষে বাগমারা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা বরাবরে মোকদ্দমাটি পুনঃ তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বাগমারা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) রশিদুল ইসলাম এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিজ্ঞ আদালত থেকে কোন প্রকার নথি আমার নিকট এক পর্যন্ত আসে নাই। নথি আসলে যথাযত তদন্তের মধ্যেমে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।


প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২ | সময়: ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর