কালের সাক্ষী হাটিকুমরুল মন্দির

তাড়াশ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের সলঙ্গায় অবস্থিত প্রায় পাঁচশত বছরের পুরোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির। উঁচু একটি বেদীর উপর নবরত্ন পরিকল্পনায় নির্মিত মন্দিরের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ১৫ দশমিক ৪ মিটার এবং প্রস্থ ১৩ দশমিক ২৫ মিটার।
হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দিরে চারপাশের দেয়ালে রয়েছে নানা রকম পোড়ামাটির অলঙ্করণ। এসব অলঙ্করণে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানান দেব-দেবীর মূর্তি, লতা-পাতা, ফুল ইত্যাদি। তিনতলা বিশিষ্ট এই স্থাপনার উপরের রত্ন বা চূড়াগুলো প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। মূল মন্দিরের বারান্দায় সাতটি এবং ভেতরের দিকে পাঁচটি প্রবেশপথ আছে। দ্বিতীয় তলায় কোনো বারান্দা নেই।
মন্দিরের নির্মাণের সময় সম্পর্কিত কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। আনুমানিক ১৭০৪ থেকে ১৭২৮ সালের মধ্যে মুসলিম নবাব মুর্শিদকুলি খানের শাসনামলে এটি নির্মিত হয়। নবাব মুর্শিদকুলি খানের নির্দেশে রামনাথ ভাদুরী নামে জনৈক তহসিলদার এটি নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দিরের আশপাশে আরো তিনটি ছোট মন্দির রয়েছে। নবরত্ন মন্দিরের উত্তর পাশে আছে শিব-পার্বতী মন্দির। শিব-পার্বতী মন্দিরের একটু পশ্চিমে রয়েছে দোচালা আকৃতির একটি মন্দির। এর নাম চন্ডি মন্দির।
হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির লাগোয়া পুকুরের পশ্চিম পাশে আছে ছোট একটি শিব মন্দির। বাইরের চারপাশের দেয়ালে পোড়া মাটির অলঙ্করণে শোভিত এ মন্দিরটিও খুব সুন্দর। স্থান ও কাল ভেদে এই মন্দিরটি এখন একটা পর্যটন স্থান হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার মানুষ দেখতে আসে এই নিদর্শনটি। মন্দিরের চারপাশে বাউন্ডারি দেওয়া হয়েছে। মন্দির ঘিরে রয়েছে শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দিরসহ এখানকার সবগুলো মন্দিরই বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে স্বীকৃত। এগুলোর দেখভালও করে থাকে সরকারের এই সংস্থা।


প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২২ | সময়: ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ